নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বাগাতিপাড়ার ২৯ বছর আগে বিধবা ঝুরমান বেওয়া সরকারের কাছ থেকে ৯৭ শতক খাসজমি বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু অর্থের অভাবে তিনি সেই জমিতে ঘর নির্মাণ করতে বা চাষাবাদ করতে পারেননি। অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে তিনি জীবিকা অর্জন করতেন। জীবনসায়াহ্নে এসে তিনি বন্দোবস্ত নেওয়া ওই জমি সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে দান করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।ষাটোর্ধ্ব ঝুরমান বেওয়ার নিজের থাকার ঘর নেই। বৃদ্ধ বয়সে অন্যের বাড়িতে ফুটফরমাশ খেটে রাতে বোনের বাড়ির পাশের এক ঝুপরিতে কাটান রাত। অথচ ভূমিহীন হিসেবে সরকারের কাছ থেকে পত্তন নেওয়া ৮০ শতক জমি বাড়িঘর নির্মাণ করতে ৪০ জন ভূমিহীনকে দিয়ে ‘বিরল দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করেন তিনি। এ ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এবার তিনি সরকারের কাছ থেকে একটি নতুন বাড়ি উপহার পাচ্ছেন।
আজ শনিবার দুপুরে নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ ঝুরমান বেওয়াকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়ি নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবীর হাতে নিজের পত্তন নেওয়া ৮০ শতক জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করছেন ষাটোর্ধ্ব ঝুরমান বেওয়া। গত ১৪ নভেম্বর তোলানাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা দেবীর হাতে নিজের পত্তন নেওয়া ৮০ শতক জমির কাগজপত্র হস্তান্তর করছেন ষাটোর্ধ্ব ঝুরমান বেওয়া। গত ১৪ নভেম্বর তোলাপ্রথম আলো
বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কৈচরপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের মেয়ে এবং নাটোর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত হাতেম আলীর স্ত্রী ঝুরমান বেওয়া।
উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক জানান, বাড়িটিতে দুই কক্ষবিশিষ্ট শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর এবং একটি শৌচাগার থাকবে। এতে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয় হবে। তিনি বলেন, ঝুরমান বেওয়ার
নিজের থাকার ঘর নেই। অথচ তিনি ৪০ জনের বাড়ি নির্মাণের জন্য সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৮০ শতক জমি দান করেছেন। এটা বিরল একটা ঘটনা। তাঁকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক। পরে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা ও একটি চাদর উপহার দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনও প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল, উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত আনজুমান ও ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস।