মুজিববর্ষে দেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা কত অসহায় মানুষকে জমিসহ ঘর দিচ্ছেন কিন্তু আমার ভাগ্যে একটি ঘর জুটলো না। আমার মতো অসহায় হত দরিদ্র কর্মীকে এখন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা এমনকি আমাদের এমপি (বন মন্ত্রী) সাহেবও চেনেন না। অথচ আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে দলের জন্য সাধ্যমতো অনেক করেছি কিন্তু আজ দলের সুসময়ে আমাদের খোঁজ কেউ রাখেনা। দুচোখে অশ্রæ নিয়ে এ কথাগুলো বলেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার অজমীর গ্রামের ক্ষুদ্র সবজী বিক্রেতা উমাপদ দে ছানা। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, করোনা কালিন দীর্ঘ নয় মাসে পুঁজিপাতি সবকিছু হারিয়ে এখন পথে বসেছি। এখন দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগার করা অসম্ভব হয়ে পরেছে। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে এবার না খেয়ে মরতে হবে। দু’চোখে পানি যেন আটকাতেই পারছেন না ক্ষুদ্র সবজী বিক্রেতা ছানা দে। তিনি আপেক্ষ করে বলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃপা দৃষ্টি ছাড়া আমার মতো অসহায় হত দরিদ্রকে কে সহায়তা দেবে ? মরার বছর (২০২০) আমাকে নিঃস্ব করে পথে বসিয়ে দিলো। কিভাবে পরিবার নিয়ে বাঁচবো, সে চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারিনা, দুই চোখে অন্ধকার দেখছি। টাকার জন্য একমাত্র ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পথে। ছানা দে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের আমলে বড়লেখা ষ্টেশন বাজারের নিজের দোকান ভিটা ছিলো। ব্যবসাও ছিলো জমজমাট। সেসময় থেকে আওয়ামীলীগের একজন নগন্য কর্মী হিসেবে দলের জন্য কাজ করে আসছি। দেশ স¦াধীন হওয়ার মাত্র ৪ বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর যখন আওয়ামীলীগের নাম নেয়া অসম্ভব হয়ে পরেছিল সেসময় দলের কর্মী হিসেবে কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুরকন্যা শেখ হাসিনা দেশে আসার পর যখন আওয়ামীলীগের থানা ও জেলার মিটিং এ নেতাকর্মী যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া করে দিয়েছি নিজের টাকায়। আজ কত নেতা পদ পদবী নিয়ে আরাম আয়েস করছেন, সম্পদের মালিক হয়েছেন এখন আমাকে কেহ চিনেনই না। শতবছর আগের বাপদাদার জড়াজীর্ণ ঘরে কোনভাবে দিন কাটাচ্ছি। একটা ঘর ও খামার কতজন পাচ্ছেন কিন্তু আমি কোন সরকারি সাহায্য পেলাম না এটাই দুঃখ। এলাকার এমপি সাহেব মন্ত্রী হয়েছেন, করোনার সময় কতবার উনার কাছে আবেদন করলাম কিন্তু সাড়া পেলাম না। গরীব মানুষের খবর কেহ নেন না। একমাত্র দশ টাকার চাল ছাড়া আর কোন সহায়তা আমার জুটেনি। শুধু চাল দিয়ে তো সংসার চলে না। ৬০ বছরের ওপর বয়স হলেও জুটেনি বয়স্ক ভাতা। বড়লেখার অজমীর গ্রামের উমাপদ দে ছানা এ প্রতিবেদকের কাছে অনুরোধ করেন তার দুঃখের কথাটি যেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেই। তাই জীবনের শেষ সময়ে আওয়ামীলীগের নিবেদিত প্রাণ কর্মী উমাপদ দে অনুরোধ দেশের জনদরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি মুজিববর্ষে তাকে একটি ঘর, একটি খামার দিয়ে তার পরিবারটিকে বাঁচার অবলম্বন করে দিতেন, তবে তিনি ও তার পরিবার আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের জন্য সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর এই অসহায় মানুষটির আহাজারী শুনতে পাবেন কি?