জাতির পিতা তোমাকে মনে পড়ে


এনামুল হক টগর

জাতির পিতা,
তুমি শিখিয়েছিলে জীবন এক মহা-সংগ্রাম ও ভালোবাসায় মহৎ,
এই পৃথিবীকে বিরাজিত করে জ্ঞানের চৈতন্য দিচ্ছে জ্যোতির্ময় শিখা অর্নিবাণ!
বিজ্ঞ ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোর শিখায় আবর্তন আর রূপান্তরে করছে বিবর্তন!
বাংলার নিগুঢ় মৃত্তিকায় তোমার বিনয় প্রেম ও বিদগ্ধ ভালোবাসা,
আর তোমার মস্তিষ্কের চিন্তা থেকে অধিকারের বিপ্লবী শ্লোগান আশা,
ভবিষ্যৎ স্বাধীন অখণ্ড বাংলাদেশকে গড়ার দিলো সূচনা-
মমতাময়ী জন্মভূমির প্রজ্ঞাময় আলোর সুবাসে দীপ্তিময় দিন আসে জীবন নতুন।
তাঁর সাথে চন্দ্র সূর্য নক্ষত্র আর তারকাগুলো জেগে উঠে সফল,
প্রত্যাশার নতুন আগামী আমাদেরকে চেতনা দিলো আলো,
পৃথিবীর উদ্যানে বসন্ত ফুলগুলো স্বাগত জানালো চঞ্চল,
সমুজ্জ্বল দিনের স্বপ্নরা মুক্তিযুদ্ধের রূপ ধারণ করলো অনল,
অনাগত সাম্যের নিপুণ গান গাইবে বিদগ্ধ প্রেম স্বাধীনতার।
সদ্য কুঁড়িগুলো ফুটাবে ফুলে ফলে সৌন্দর্য শোভায় আবার,
জীবনগুলো পৌঁছে যাবে বিজ্ঞানের বিজ্ঞ ধারায় সময় আগামীর।
যা থেকে সম্মান আর মর্যাদার গৌরবে সভ্যতার জ্ঞান পাবে জাতি।
সূর্যালোকের জ্যোতির্ময় বিকিরণ ছড়াবে পৃথিবী আলোকিত দ্যুতি।
বীজের অঙ্কুর থেকে শস্যের কাঁচা রং হবে পরিপক্ক জীবন বিকশিত-
নতুন আহ্বানে দক্ষ হবে কর্ম তরুণ যুবক ও যুবতীর প্রগতি,
শুভ্র প্রাণ মাথা তুলে দাঁড়াবে নব নব রূপ চৈতন্যে স্বাগতম!
কিন্তু তুমি চলে গেলে আর শত্রুরা ইতিহাস মুছে দিতে লাগলো সময় ক্লান্ত।
বেদনা ও দুঃখগুলো জাতিকে আবার নতুন করে কাঁদালো বেদনা বিফল।
তোমার সংগ্রাম ও দাবীগুলো নৈশব্দের ভেতরই স্তব্ধ হয়ে রয়ে গেলো!
তখন থেকেই দেশ জুড়ে শুধু মানবের অগ্নি দহন যন্ত্রণা,
প্রতিনিয়ত দূর্নীতি সন্ত্রাস চুরি ডাকাতি জঙ্গিবাদ মাদক ও লুটেরা ঘাতকদের হানাহানি।
জাতিকে আস্তে আস্তে আঁকড়ে ধরতে লাগলো বেদনা গভীর ক্ষত আঁধার,
দেশজুড়ে হাজারও জনতার দুঃখ কষ্ট ও যন্ত্রণার পরিতাপ হাহাকার।
এমন দূর্দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তোমাকে মনে পড়ে অমৃত চেতনায়।
যখন দেখি দুঃশাসন অপরাধ আর রক্তাক্ত পথে পথে অবিচার অন্যায়,
আরও দেখি স্বাধীনতা বিরোধী মুখোশধারী ঘাতকের অশুভ পদচিহ্ন যাত্রায়!
নিলর্জ্জ ভাবে গাড়ীতে জাতির পতাকা উড়ায়!
মসজিদ মন্দির গোরস্থান আর অসহায় গরীবদের অনুদান টাকা আত্মসাৎ করে বিস্ময়।
এ-যেন আর্দশ ও সততার স্বীকৃতি থেকে মানবতা বঞ্চিত এক ক্লান্ত কষ্টের দিন অসহায়।
কিন্তু বিত্তবানরা এখনো করে হানাহানি খুনোখুনি আর জুলুম ব্যভিচার,
যৌনতার অবক্ষয়ে নেশাগ্রস্থ যুবকদের সংসার ভাঙার ব্যর্থ হাহাকার।
সময় সময় যেন চৈতন্যকে হারিয়ে ফেলে যন্ত্রণার দাউ দাউ বিষে নিঃশেষ।
আতঙ্ক দূর্ভিক্ষভরা দুটি চোখ আঁধারে আঁধারে কাঁদে দুঃখ কষ্ট অবশেষ।
দীর্ঘ যন্ত্রণা আর বেদনা থেকে সমাজ যেন দিশেহারা,
বকুল ঝরে যায় শেফালি ঝরে যায় টগর ঝরে পরে ক্লান্ত অনাহারী।
মিলনমালা পড়ে থাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনের বাণীতে বাসনায় বিভোর নিত্য।
শুধু রোষ আর উন্মুত্ততার আঘাতে রক্ত ঝরে ক্ষত বিক্ষত আহত।
জীবনের ভেতর পুষ্প কাঁটাগুলো পরিতাপে জ্বলে ওঠে নিষ্ঠুর নির্মম ক্ষুব্ধ!
জাতির মগজ যেন অযত্ন ও আঁধারে নিরব উৎকীর্ণ চিন্তায় স্তব্ধ!
অক্ষম প্রতিবাদহীন নিরুপায় দাঁড়িয়ে ক্লান্ত সময় ও জীবন,
অশুভ লোকনিন্দা ধিক্কার ও বেদনায় চেতনাগুলো নিরুপায় মলিন।
কিন্তু তখনও আমরা বিপন্ন ক্ষুধার দহনে মানবতার ছবি আঁকি,
অকাল বলিদান অশুভ পূর্বাভাসে কাঁদে বিপন্ন বিরহের প্রিয় সখি।
স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকরা আবার নিষ্ঠুর নির্মম মাথা তুলে দাঁড়াতে চায়!
জাতিকে আঘাতে আঘাতে আবার ক্ষত বিক্ষত করতে চায় ঘাতক নির্দয়।
এমন সময় বঙ্গবন্ধু তোমাকে মনে পড়ে প্রেম সংগ্ৰাম ও মিছিলে মমতায়,
তুমি ফিরে এসো আর সুন্দর সমুদ্রকে বহমান করো পরিচ্ছন্ন জনতায়,
তোমার দুঃসাহসিক অভিযানের বৈচিত্র্যময় জ্ঞান দিয়ে নিপুণ দক্ষ,
ভ্রুনের অঙ্কুরে স্বচ্ছ আলো দাও প্রবল শক্তিশালী হোক জন্মভূমির উদ্যানে বৃক্ষ!
আমাদের ন্যায়পরায়ণ বিদ্রোহী মন যেন মহামারি পাড়ি দিতে পারে অশনি দূর্যোগ কঠিন,
অশ্রু বিরহের যন্ত্রণাকে ফুলের সাথে আলিঙ্গন করাতে পারে আগামী ক্ষুধামুক্ত যাত্রা সুদিন।
জীবন কর্মে জাতি যেন আশার সংসার গড়ে তুলতে পারে সুন্দর নিপুণ,
কিষাণ রূপে পতিত জমিতে নতুন ফসল ফলাতে পারে ক্ষুধামুক্ত শান্তির জীবন।
অন্তরঙ্গ দহন পিপাসা বুকে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি দীপ্ত দৃঢ় খুঁজি আলো,
জীবন ও মৃত্যুর রিক্ত হাহাকার বুকে নিয়ে সময়ের মিছিলে দাবি অনড় উজ্জ্বল।
মহা-জীবনের সাথে এক মহামিলনের চৈতন্য আকাঙ্ক্ষায়।
তুমি ফিরে এসো আর এই মাটির সানুদেশে চেতনা দাও আলো উদয়!
শ্রমজীবী আর কর্মজীবী শ্রমিকের শ্লোগানে তুমি এক জীবন্ত মহা-সংগ্রামী,
সাহসী বীরের মতো বাঁশি বাজাও গ্রাম
আর নগরের দিকে দিকে নতুন শস্য আগামী।
বাংলার মৃত্তিকা দৃঢ় দীপ্ত হোক নতুন সূর্যের সাম্য কিরণ উদয়।
সজাগ প্রজ্ঞায় অবিচল চারাগাছ বেড়ে উঠুক আবাদের খামারে বিজ্ঞ অভিজ্ঞতায়,
শিল্পের নগরে নগরে রৌদ্রময় উত্তাপ ধ্বনিত হোক নতুন পণ্য
মহৎ ভালোবাসায় জীবনে পরিশুদ্ধ দরজাগুলো খুলে যাক ধন্য ধন্য।
আত্মার পাখি অনুরাগে সুবাস ছড়াক মহৎ সভ্যতার দেশপ্রেম।
তোমার সততার মুকুট জাতির চোখে উদ্ভাসিত হোক মাতৃভূমির মমতা প্রেম!
কে বলে তুমি একা,কে বলে তুমি দলে,কে বলে তুমি নেই,
তুমি সমগ্র বাংলার,তুমি সমগ্র স্বাধীনতার অখণ্ড ভূমির,
তুমি মহা-দেশপ্রেমিক,তুমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু জানে সবাই।
তোমার অভিজ্ঞতার অমৃত প্রেম সুধায় জাগ্রত হোক প্রজ্ঞাময় বাংলাদেশ অথই।
তুমি স্বাধীনতার মহানায়ক,তুমি জাতির পিতা ও সভ্যতার আর্দশ পরিচয়,
তুমিই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী চেতনায় দৃঢ় দীপ্ত উদয়।
তোমাকে মনে পড়ে শুধু তোমাকেই মনে পড়ে বাংলার অনাদি অনন্ত ভালোবাসায়।