মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম হানিফ উল্লাহ স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলে ও এখন ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বিকৃতি পাননি। বিজয়ের মাসে এ প্রতিবেদকসহ একাধিক সাংবাদিকদের সাথে মরহুম হানিফ উল্লাহ‘র পুত্র হাজী ছনাওর মিয়ার সাথে কথা হলে তার স্বাধীনতা যুদ্বের অনেক স্মৃতি বিজড়িত কথা বলে কান্নায় ভেংগে পড়ে বলেন- ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্বে তার বাবা হানিফ উল্লাহ পাকিস্থানিদের হাতে নির্মমভাবে মারা যাবার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি আরো জানান- ১৯৭১সালের ৪ ডিসেম্বর সকাল বেলায় তার বাবাকে পাকিস্তানিরা ঘর থেকে তুলে এনে মুন্সিবাজারস্থ দুর্গা বাড়িতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। বাবা হত্যার খবর বিকাল ৪টায় পেলেও বাবার লাশের কাছে যেতে দেওয়া হয় নাই স্ত্রী সন্তানদের। স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগীতায় হত্যার পর থেকে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া, পুত্র হারানোর কষ্ট সইতে না পেরে হানিফ উল্লাহর বাবা মৃত আজমত উল্ল্যাহ এর কয়েকদিন পর তিনিও মারা যান। এরপর থেকে অতি কষ্টে জীবন চলছিল মরহুম হানিফ উল্লার স্ত্রী রাবিয়া বেগম ও তার সন্তানরা আব্দুল জব্বার, মো: ছনাওর,মো: আনোয়ার, মো: ছানু, মো: আনকার,মো: আজাদ, সুফিয়া বেগম,শামীম বেগমগংদের। ১৯৭১ সালে হানিফ উল্লা হত্যার পর থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে তাদের পরিবার পেয়ে অনেক সাহায্য সহযোগীতা, জাতির জনকের পক্ষ থেকে ঢেউ টিন, ডেগ বাসনসহ চাল ডাল ইত্যাদি সহায় নিয়মিত পেতেন। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘাতকরা নির্মম ভাবে হত্যার পর থেকে হানিফ উল্ল্যার পরিবার সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন এমনি তার পরিবারে নেমে আসে নির্যাতন নিপীড়ন। স্থানীয় রাজাকাররা শহীদ হানিফ উল্ল্যার বাড়ি ঘর জবর দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে মরহুম হানিফ উল্লার স্ত্রী সন্তানদের বাড়ি থেকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে জমিজমা দখল করে রাজাকাররা। এর পর থেকে হানিফ উল্লার সন্তানরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেন। মরহুম হানিফ উল্ল্যার পুত্র হাজী ছনাওর জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত বাবাকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত জীবনে তার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। শুধু মাত্র চাওয়া পাওয়া হল তার বাবাকে একজন শহীদ মুক্তিযোদ্বার স্বীকৃতি। তিনি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় তার বাবাকে হত্যা করা হয়, বাবা হত্যার বিচার ও তাদের পৈত্তিক সম্পত্তি ফিরে পেতে সাহায্য কামনা করেন।