মোঃ আফতাব হোসেন ,চাটমোহর, পাবনা।
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ৬১নং সড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিন সভাপতির স্বাক্ষর জাল করায় আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে।
বিবরণে জানা যায় যে, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ৬১নং সড়াবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্লিপ ও ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পায়। বরাদ্দকৃত টাকার ব্যয় সংক্রান্ত মিটিং না করে সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমানের থেকে ব্যাংক চেকে অগ্রীম স্বাক্ষর চাইলে সভাপতি মিটিং করে স্বাক্ষর প্রদান করবেন বলে প্রধান শিক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিনকে জানান। তখন উক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিন কৌশলে নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটি ভাঙ্গার ষড়যন্তে লিপ্ত হন এবং সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ৪টি পত্র তৈরি করে কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার প্রস্তাব শিক্ষা কমিটিতে জমা দেয়া হয়। পরবর্তীতে নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটি ভেঙ্গে দেয়া হয়।
এদিকে উক্ত প্রধান শিক্ষক সভাপতিকে ৬ হাজার ৫ শত টাকা হাওলাদ/কর্জ দিয়েছেন মর্মে তা জমা প্রদান করার জন্য সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ৩টি পত্র তৈরি করেন। উক্ত প্রধান শিক্ষক সভাপতির স্বাক্ষর নিজেই স্বাক্ষর করেন এবং স্বাক্ষরের নীচে তারিখ দেন।
পরবর্তীতে কমিটির সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান আদালতে উক্ত প্রধান শিক্ষক তাঁর স্বাক্ষর জাল করেছেন মর্মে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাবনা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিঃ ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালত-০২ এ মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪৮/২০১৯(আট) সিআর ৫৮/২০। উক্ত মামলার প্রধান বিবাদী করা হয় উক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিনকে এবং ২নং বিবাদী মোঃ আনোয়ার হোসেন, তৎকালীন সহকারি শিক্ষা অফিসার, আটঘরিয়া এবং ৩নং বিবাদী সিরাজুম মুনিরা, তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার, আটঘরিয়া, পাবনা।
বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত করেন এবং সভাপতির স্বাক্ষর হ্যান্ড রাইটিং এক্সপাট করার জন্য বিশেষ পুলিশ সুপার (ফরেনসিক) বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি, ঢাকায় প্রেরণ করেন। সেখানে পুলিশ পরিদর্শক ও হস্তলিপি বিশারদ বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি উক্ত স্বাক্ষর ‘অমিল’ পাওয়া যায় মর্মে প্রতিবেদন দেন।
মোঃ রইচ উদ্দিন প্রতারনা করার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি ও সভাপতির স্বাক্ষর করে উক্ত বিদ্যালয়ের যৌথ হিসাব স্বাক্ষরের সোনালী ব্যাংক, আটঘরিয়া শাখায় পাওনা বাবদ টাকা জমা প্রদান পত্রে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অনুরোধ করে প্রধান শিক্ষক নিজেই সভাপতির পরিচয় দিয়ে নিজেই জাল স্বাক্ষর প্রতারণা ও জালিয়াতি করায় পেনাল কোডের ৪৬৮/৪৭১ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয় মর্মে পিআইবি আদালতে রিপোর্ট দাখিল করেন।
বিজ্ঞ আদালত গত ১২ নভেম্বরে উক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিনের নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
এ বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ারেন্ট প্রাপ্তি স্বীকার করেন এবং আসামী ধরার জন্য চেষ্ঠ অব্যাহত আছে বলে জানান।
উক্ত সভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমান তাঁর স্বাক্ষর প্রধান শিক্ষক জাল করেছেন স্বীকার করেন এবং হাওলাত/কর্জের কোন ঘটনা নেই মর্মে জানান।
উল্লেখ যে, বাদী তাঁর আরজীতে উক্ত প্রধান শিক্ষক ইতোপূর্বে কারা বসবাস করেছেন এবং খুনী ও গর্ভপাতকারী নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি। এ’ছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায় উক্ত প্রধান শিক্ষক নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে প্রায়ই উপজেলা এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসে অবস্থান করেন।