সুন্দরগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধে শাহাদুলকে হত্যা করে লাশ ভাসিয়ে দেয় নদীতে

মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শাহাদুল ইসলামকে (৩৫) মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার অভিযোগে চার মাস পর গত শনিবার রাতে থানায় মামলা করেছে শাহাদুলের স্ত্রী নাছিমা বেগম। পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি শফিকুল ইসলামসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে। শফিকুল ইসলাম ওই গ্রামের বানু শেখের ছেলে।  ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৭ জুলাই উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চল চর মাদারীপাড়া গ্রামের কারেন্ট বাজারে। থানা পুলিশ ও স্বজন এবং স্থানীয়দের নিকট থেকে জানা গেছে দীর্ঘদিন থেকে শাহাদুল ইসলাম তার বন্ধু ওই গ্রামের শফিকুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম, মাসুদ মিয়া, ও চান্দ মিয়ার সাথে চলাফেরা করত। শাহাদুলের বাড়ি সংলগ্ন একটি জমি শফিকুল নিতে চেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ওই জমিটি শাহাদুল ক্রয় করে। এ নিয়ে শফিকুলের সাথে শাহাদুলের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক শফিকুলের কথিত প্রেমিকা রহিমা বেগম ফেলানি বেগম মোবাইল ফোনে শাহাদুলকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। রাতে শাহাদুল বাড়িতে না ফিরলে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরদিন ১৮ জুলাই তার স্ত্রী নাছিমা কারেন্ট বাজারে শফিকুলের দোকানে গিয়ে স্বামীর কথা জিজ্ঞাস করলে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলে। স্বামীর সন্ধান না পেয়ে ২৬ জুলাই থানায় জিডি করে (জিডি নং-১১১২) নাছিমা। এনিয়ে একাধিক বার থানায় মামলা করতে গেলে সুনিদিষ্ট তথ্য না থাকায় মামলা নেয়া হয়নি। এরপর মোবাইল ফোনের সিডিআর তালিকা থেকে ফেলানি বেগমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গত বুধবার শফিকুলকে এবং একদিন পর বৃহস্পতিবার ফেলানিকে আটক করে জিজ্ঞাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফেলানি জানান, শফিকুলের নির্দেশ মোতাবেক তিনি শাহাদুলকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর তার সামনে তিন বন্ধু মিলে তাকে হত্যা করে লাল নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ফেলানি যাতে বিষয়টি প্রকাশ না করে সে জন্য তাকেও হত্যার হুমকি দেয়। গত রবিবার পুলিশ আসামি শফিকুল ইসলাম ও ফেলানি বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয় এবং ওই দিন বিকালে শফিকুলকে ৫ দিনের এবং ফেলানিকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন রিমান্ডে ফেলানি ও শফিকুল শাদাদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে এবং অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে। থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) বুলবুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ফেলানি ঘটনার সুনিদিষ্ট তথ্য প্রদান করেছে। সে মোতাবেক শফিকুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। জিজ্ঞাবাদে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।