ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
শিকল দিয়ে তিন দিন বেঁধে ঈশ্বরদীতে মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়েরের ঘটনা নিশ্চিত করে থানার অফিসার ইনচার্জ সেখ নাসীর উদ্দিন জানান, নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা নজরুল ইসলাম মামলায় বাদী হয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষক পিয়ারুল ইসলামকে মামলায় আসামী করা হয়েছে। মামলা নং ২০ । তিনি থানায় আটক রয়েছেন। শিক্ষার্থীর বাবা মামলা না করলে স্বত:প্রণোদিত হয়ে ঈশ্বরদী থানা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি গ্রহন করছিল বলে ওসি জানিয়েছেন।
প্রসংগত: ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের কদিমপাড়া বুড়া দেওয়ান নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় আমপাড়া শেষ করা মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষার্থী মোবারক (১১)কে তিন দিন লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্মমভাবে মারধরের ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাযের সময় ওই শিক্ষার্থী পালিয়ে পার্শ্ববর্তী বাজারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে। লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে নির্মম নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পায়। এসময় স্থানীয়রা থানায় জানালে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় এনে পরিবারের লোকজনদের খবর দেয়। পুলিশ রাতেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হাফেজ আব্দুল মমিন, শিক্ষক পিয়ারুল ইসলাম ও সিনিয়র শিক্ষার্থী সাব্বির আহম্মেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে রাখা হয়।
শিশু শিক্ষার্থী নির্যাতনের এই নির্মম ঘটনা অনলাইনে গতরাতেই প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর সর্বত্র নিন্দা, আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। প্রথম অবস্থায় ঈশ্বরদী থানা এই ঘটনার মামলা রেকর্ডের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ তটস্থ হয়।
ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী মোবারক আটঘোরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বাঁচামরা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। শুক্রবার রাতে থানায় নির্যাতিত শিক্ষার্থী মোবারকের বাবা ও মা মূর্শিদা খাতুন জানান, মোবারককে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে নির্ম্মমভাবে পেটানো হয়। থানায় মোবারকের পেছন দিকে কোমড়ের নীচে পা পর্যন্ত নির্ম্মম আঘাতের চিহ্ণ দেখা গেছে। তিন দিন শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর ছাড়াও মোবারককে ৭ বার থুতু ফেলে সেই থুতু তাকে দিয়ে চাটানো হয়েছে বলে মা মুর্শিদা অভিযোগ করেন।