ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের ধানের শীষের প্রচারণায় অংশ নিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্য অনীহা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা কমিটির আহব্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব মনোনয়ন পেলেও ঈশ্বরদীতে তৃণমূল নেতা-কর্মিরা অতীতের মতোই মূখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। যেকারণে তাঁর নিজ গ্রামের বাড়ি সাহাপুর ও দুয়েকটি এলাকা ছাড়া রবিবার পর্যন্ত দু’টি উপজেলায় ধানের শীষের পোষ্টার চোখে পড়েনি। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতারা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের মাঠে নামানোর চেষ্টা করেও নিস্ফল হয়েছেন।
হাবিব আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদানের পর থেকে তৃণমূলের বেশীরভাগই তাঁকে মেনে নিতে পারেননি। প্রায় ২০ বছর ধরে হাবিব বনাম সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সরদারের দ্বন্দ্ব বিরাজমান। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও হাবিবের একই অবস্থা বিরাজমান ছিল। এখানকার সকল কমিটি ভেঙ্গে দেয়ায় নির্বাচনে সংকট অতীতের চেয়ে আরো বেশী ঘনীভূত হয়েছে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি’র তৃণমুলের নেতা জানান, ‘ধানের শীষের পোষ্টার কি করি দেখবেন, হাবিব পোষ্টার লাগানোর লোক পাবি কোনে।’
পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সাংগাঠনিক অবস্থা সুদৃঢ় করে মনোনয়ন প্রত্যাশিসহ নেতা-কর্মীরা প্রতিদিনই একাধিক উঠোন বৈঠক ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা নূরুজ্জামান বিশ্বাসের নৌকা বিজয়ের জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পাবনা জেলার আওয়ামী লীগ ও অংগ সংগঠনের নেতারাও প্রচারণায় নেমেছেন। নৌকার পোষ্টারে ঈশ্বরদী ও আটঘোরিয়া ছেঁয়ে গেছে। ১৪ দলীয় জোট ও বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতারাও নৌকা বিজয়ী করার জন্য আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন। কিছু কিছু এলাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউল করিমের ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের পোষ্টারও দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত: স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালে তদানিন্তন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাবিবকে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থি সিরাজ সরদার বিজয়ী হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ হাবিবকে মনোনয়ন না দিয়ে ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা জনাব শামসুর রহমান শরীফকে মনোনয়ন দিলে হাবিব এসময় বিএনপিতে যোগদান করেন। হাবিব বিএনপিতে যোগ দিলেও ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৯ সালের নির্বাচনে সিরাজ সরদারকেই ধানের শীষের মনোনয়ন দেয়া হয়। ২০০১ সালে হাবিব বিএনপি’র বিদ্রোহী প্রার্থি হয়ে ‘কুড়াল’ প্রতিকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন। এখান থেকেই তৃণমুল নেতাদের সাথে অর্ন্তদ্বন্দ্বের শুরু। বিএনপির এই অর্ন্তদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনেও নিষ্পত্তি হয়নি।