নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার গুমাই নদীতে একটি বালুবাহী নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষে যাত্রীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচশিশুসহ ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের রাজনগর এলাকায় গুমাই নদীতে এ নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৩৬ যাত্রী নিয়ে নৌকাটি সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ঘাট থেকে নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা এলাকায় যাচ্ছিল। বেলা ১০টার দিকে উপজেলার রাজনগর এলাকায় গুমাই নদীতে একটি বালুবাহী নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটলে যাত্রীবোঝাই নৌকাটি ডুবে যায়। পরে ঘটনার স্থল থেকে স্থানীয়রা দশজনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এরমধ্যে দুই পরিবারের ছয় জন রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া নিহতরা হচ্ছেন, সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ইনাতনগর গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবের স্ত্রী লুৎফুন্নাহার (২৫) ও আড়াই বছরের ছেলে রাকিবুল, এই পরিবারের মনিরা (৫) নামের আরো এক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নেত্রকোনা সদরের মেদনী গ্রামের আবুচানের স্ত্রী হামিদা (৫০), সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার ইনাতনগর গ্রামের সাহেব আলীর স্ত্রী মজিদা আক্তার (৫০) মধ্যনগর এলাকার কামাউড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে অনিক (৭) একই গ্রামের হাবিকুলের স্ত্রী লাকি আক্তার (৩০) ও তার দুই শিশু টুম্পা আক্তার (৫) ও জাহিদ হোসেন (৩), ধর্মপাশা উপজেলার জামালপুর গ্রামের জোবায়েল এর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৬) এবং একই গ্রামের আব্দুল করিমের স্ত্রী সুলতানা আক্তার (৪৫)।
এছাড়াও আরো চারজন নিখোঁজের সন্ধান পাওয়া গেছে। নিখোঁজরা হচ্ছেন মনিরা (৫) ইনাতনগরের আব্দুল হান্নানের ছেলে রতন মিয়া (৩৫) একই এলাকার ফাতেমা আক্তার (৩৫) ও মোফাজ্জল নামের একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
ওই ট্রলারে থাকা আব্দুর রহমান নামে এক ব্যাক্তি বলেন, মধ্যনগর ঘাট থেকে আমরা ভাড়া চালিত একটি ট্রলারযোগে নেত্রকোনার ঠাকুরাকোনা যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে উল্টোদিক থেকে আসা আরেকটি ট্রলার আমাদের ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে ট্রলারটি পানিতে ডুবে যায়। আমরা সাঁতার কেটে তীরে উঠতে পারলেও নৌকার ভেতরে থাকা যাত্রীরা অনেকেই বের হতে পারেনি।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা জানান, বালুবাহী একটি নৌকার ধাক্কায় যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। দশ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারটিতে ৩৬ জন যাত্রী ছিল। বাকিদের উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে জানান, ট্রলারডুবিতে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের লাশ পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান জানান, পাঁচ জনকে জীবিতসহ দশ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। চার জন নিখোঁজের পরিচয় পাওয়া গেছে। এছাড়া আরো দশ থেকে পনেরো জনের মতো নিখোঁজ রয়েছে বলে স্থানীয়রা বলছেন। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।