ঈশ্বরদীতে গ্যাসের ১৪০ পিএসআইজি প্রেসারের লাইনে লিকেজ সৃষ্টি হওয়ায় ইপিজেড এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আইকে রোডের ন্যাংড়ার দোকানের কাছে এলাকার লোকজনের কাছে লিকেজের ঘটনা ধরা পড়ে। পরে ঈশ্বরদীস্থ পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানী লিঃ এর কর্যালয়ে খবর দেয়া হয়। ক্যাথডিক প্রটেকশন সিষ্টেমে ত্রুটির কারণে এবং নিয়মিত মনিটরিং না করায় মাটির ক্ষয়ে এই লিকেজ সৃস্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যেই লিকেজ চিিহ্নত করে মেরামত কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে কোম্পানীর লোকাল অফিস জানিয়েছে। উদ্ধৃতন কর্তৃপক্ষ এঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে দাবী করেছেন।
পিজিসিএল এর ঈশ্বরদী কর্যালয়ের ম্যানেজার প্রকৌশলী বরকত হোসেন মোল্লা জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে লোকাল টিম নিয়ে এখানে অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পাবনা অফিস থেকেও টিম এসেছে। আট ইঞ্চি ডায়ামিটারের এই পাইপ লাইন দিয়ে ইপিজেডের ৯টি প্রতিষ্ঠানে ও ১টি গ্যাস ষ্টেশনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এই লাইনের আলহাজ্ব মোড় ও নতুনহাট এলাকার পিএসআইজি লাইনের বাল্ব ষ্টেশন বা পোষ্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লাইনের ভেতরের গ্যাস নির্গত করে আরো কোন লিকেজ আছে কিনা পরীক্ষা শেষে মেরামতের কাজ শুরু হবে। এতে সাময়িকভাবে ইপিজেডে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এঘটনায় বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুত্র জানায়, ২০০১ সালে বাঘাবাড়ি হতে ঈশ্বরদী ইপিজেড পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার ব্যাপী ১৪০ পাউন্ড পার ইঞ্চি চাপের এই গ্যাস লাইন সংস্থাপন করা হয়। কোম্পানীর অপরারেশন বিভাগের ক্যাথডিক প্রটেকশন শাখার অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতি মাসে মনিটরিং এর নিয়ম থাকলেও এটি করা হয় না। বছরে ১/২ বার স্পট কোটেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষার কথা বলা হলেও আদৌ করা হয় কিনা এই বিষয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে জিএম (অপারেশন) এর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি করোনা আক্রান্ত বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি একটি নিছক দুর্ঘটনা। ইতোমধ্যেই দুটি টিম কাজ শুরু করেছে। ক্যাথডিক প্রটেকশন প্রসংগে তিনি বলেন, দেশে এক হাজারেরও বেশী পোষ্ট রয়েছে। ২-৪ মাস পর পর ক্যাথডিক প্রটেকশন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।
ক্যাথডিক প্রটেকশন হলো মাটির নীচের লোহার পাইপ মরিচা ধরে যেন নষ্ট না হয়। এজন্য কম ভোল্টেজে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া থাকে। পোষ্ট গুলোতে মাটি ও পাইপ থেকে ভোল্টেজে কোন পার্থক্য আছে কিনা রিডিং নিয়ে পরীক্ষা করার কথা। প্রতি মাসে রিডিং নেয়ার নিয়ম না মানায় লাইনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ এবং গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্যাথডিক প্রটেকশন সিষ্টেম নিয়মিত কার্যকর করা না হলে একসময় লিকেজের সংখ্যা বেড়ে যাবে। শেষ পর্যন্ত সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে পাইপ লাইন পরিবর্তন করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।