নাটোর প্রতিনিধি
অন্য সব ক্ষেতে তরমুজ যখন শেষ, তখন এই আগষ্টে শুরু হয়েছে মাচায় ঝুলিয়ে চাষ করা কালো তরমুজের মৌসুম। প্রথমবারের মতো এই উপজেলায় এই তরমুজের বাণিজ্যিক চাষে সফল হয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার কৃষক আব্বাস আলী। উপজেলারধূলাউড়ি গ্রামের মাঠে তিনি এই তরমুজের চাষ করেছেন। আগষ্টে ‘অফ সিজন’ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে তরমুজ বিক্রি করছেন একশ টাকা কেজি দরে। মিষ্টতা আর অসময়ে পাওয়ায় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক আব্বাস আলী। তার সফলতায় অনেক কৃষক এখন এই জাতের তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রথমবারের মতো এই তরমুজের চাষে সফলতা পেয়ে কৃষক আব্বাস আলী তৎপর পরিধি বাড়াতে। উপজেলায় এই জাতের তরমুজ তিনিই প্রথম চাষ করেছেন। বর্তমানে শুরু হয়েছে বিপণন কার্যক্রম। কেজি প্রতি এ তরমুজ বিক্রি করছেন একশ টাকা কেজি দরে। গ্রামের বাজারে প্রকৃত সময়ে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বাজার দরে তরমুজ বিক্রি হয়। বর্তমানে বিঘা প্রতি ১৫০ মণ তরমুজ
উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে তার। স্থানীয় বাজারের গন্ডি পেরিয়ে কৃষক আব্বাস আলীর আশা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির। এদিকে অসময়ে তরমুজ হওয়ার কারনে চাহিদার ব্যাপকতার কারনে বিপণন কার্যক্রমের জন্য কোথাও যেতে হয়নি তাকে। আগ্রহীরা জমিতে এসেই কৌতুহল ভরে তরমুজের ফলন দেখছেন এবং কিনছেন। সম্প্রতি কৃষিকর্মকর্তা মোমরেজ আলী ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান তার তরমুজ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। চারিদিকে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা হলেও মাটিতে খড়ের বিছানা বিছিয়ে নয় তিনি মাচায় ঝুলিয়ে চাষ করেছেন এই তরমুজ।
কৃষক আব্বাস আলী তরমুজকে কীটনাশকমুক্ত এবং স¤পূর্ণ অর্গানিক রাখতে তরমুজকে তিনি নেটের ব্যাগে ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ফলে ক্ষেতে তার এ তরমুজের আকৃষ্টতাও বেড়েছে। ঝুলিয়ে থাকার ফলে পানিতে নষ্ট হওয়ার ভয়ও নেই। তার ক্ষেতে উৎপাদিত এই তরমুজের ওজন তিন থেকে চার কেজি। এছাড়াও এই তরমুজ বারমাসি জাতের। তিনি আবারও আরও জমিতে সম্প্রতি বপন করেছেন।
এগুলো আগামী অক্টোবর মাসে ফলন দেয়া শুরু হবে। অসময়ে মাটি থেকে উঁচুতে ঝুলিয়ে তরমুজের চাষকে ফল উৎপাদকদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত বলে কৃষিবিদরা মনে করেন।
তরমুজ চাষী আব্বাস আলী বলেন, তিনি একটি ব্যাংকে চাকরী করেন। পাশাপাশি নাটোরের কৃষির জন্য কিছু একটা করার ভাবনা থেকে এ উদ্যোগ নিয়েছেন। বিদেশী প্রযুক্তিতে তিনি এ উপজেলার তরমুজের পাশাপাশি বারমাসি বিভিন্ন ফলের চাষ শুরু করেছেন। এছাড়াও তিনি এ অঞ্চলের আগ্রহী কৃষক ও শিক্ষিত বেকারদের জন্য কৃষি বিষয়ে সহযোগিতা করতে চান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, কৃষক আব্বাস আলীর এ সফলতায় উপজেলায় এ জাতের তরমুজ চাষের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। এ জাতের তরমুজ মাত্র ৭০ দিনেই ফলন শুরু হয়। অসময়ের হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া কৃষক বেশ ভাল দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।