পাবনা’র সুজানগরে নিখোঁজের একমাস অতিবাহিত হলেও জিডি বা মামলা নেয়নি থানা, নিখোঁজের পিতাকে থানা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ

পাবনা’র সুজানগর নিখোঁজের একমাস অতিবাহিত হলেও জিডি বা মামলা নেয়নি সুজানগর থানা পুলিশ। নিখোঁজের পিতাকে থানা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সুজানগর থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা’র নিকট এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে তিনি তারাহুড়ো করে মৌখিক বলেন, আমি আসামী নিয়ে সদর আদালতে যাবো। নিখোঁজ আওয়াল এর ব্যাপারে থানায় কেউ জিডি করতে আসেনি। শুনেছি আওয়াল হোন্ডা চোর ছিল। তার নামে বিভিন্ন থানায় মামলাও রয়েছে। কিন্তু সাংবাদিকরা আওয়ালের নামে মামলার কাগজ চাইলে দেখাতে পারেনি। ওসি সাংবাদিকদের আরও বলেন আপনারা ঐ বদমায়েশ বেটা (নিখোঁজের বাবা) কে ধরে আমার সামনে এসে কথা বলতে বলেন।

গত ৪ জুলাই ২০২০ খ্রি. সুজনানগর থানার মানিকদিয়ার গ্রামের আব্দুল গফুর শেখের ছেলে আব্দুল আওয়াল (১৮)নামের এক যুবককে দাওয়াত খাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় একই গ্রামের রায়হান উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে আরিফ বিশ্বাস (২০)। কিন্তু ঐ দিন দাওয়াত শেষে আরিফ বিশ্বাস ফিরে আসলেও ফেরেনি আওয়াল শেখ। আরিফকে জিজ্ঞাসা করলে সোজা কথায় না বলে উল্টা পাল্টা কথা বলে। তারপর আত্মীয় স্বজন সহ বিভিন্ন জায়াগায় অনেক খোঁজাখুজির পর আওয়ালের সন্ধান না পাওয়ায় তার পরিবারসহ স্বজনরা দিশেহারা হয়ে যায়। এ ঘটনায় ৩/৪ দিন পর সুজানগর থানায় ওসি বদরুদ্দোজা’র নিকট নিখোঁজের বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু ওসি বদরুদ্দোজা লিখিত অভিযোগ জিডি গ্রহন না করে দরিদ্র অসহায় পিতা আব্দুল গফুর শেখকে ভুলভাল বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠায়। শুরু হয় সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুদ্দোজার নাটক, আসামি আরিফ বিশ্বাস ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জুবায়ের (২২) এই ২জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আরিফ ও জুবায়েররা প্রভাশালী ও অর্থবৃত্ত সম্পন্ন। এরপর কোন কিছু না জানিয়ে তাদের অজ্ঞাত কারণে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। ভূক্তভোগী পিতা গফুর শেখ থানায় জিডির কপি চাইলে ওসি বদরুদ্দোজা বলেন আপনারাই আপনার ছেলেকে গুম করছেন, পাছায় বাড়ি পরলে সব বেড়িয়ে আসবে, শেষে উল্টা পাল্টা গালি দিয়ে থানা থেকেও বের করে দেয়া হয়। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা নিরুপায় হয়ে সাংবাদিকদের বিষয়টি অবগত করেন। ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মিরা সরেজমিন গিয়ে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট জিডি বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি আসামী নিয়ে সদর আদালতে যাবার কথা বলে দ্রæত স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন।

সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন’র নিকট নিখোঁজ ব্যাক্তির বরাত দিয়ে আসামী ধরে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফনে বলেন বিষয়টি আমি অবগত নয়।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা আওয়াল ভাল ছেলে, একটা জলজ্যান্ত মানুষকে চোখের সামনে দাওয়াতের কথা বলে এলাকার দূর্বৃত্তরা হোন্ডায় নিয়ে গেল তারপর কোন সন্ধান নেই। এ ব্যাপারটা অত্যান্ত দুঃখজনক। সুজানগর থানা পুলিশের এমন আচরন মোটেই কাম্য নয়। সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে আওয়াল নিখোঁজের প্রকৃত রহস্য উম্মোচন করা উচিত।