‘ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদী দখল করে রমরমা বালুর ব্যবসা’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে টনক নড়েছে পাবনা জেলা ও ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব রায়হান সরেজমিনে যেয়ে ড্রেজার মেশিন অপসারণ করেছেন। বাইরে থেকে নৌকায় নিয়ে আসা বালু ওই স্থানে লোডিং ও আনলোডিং বন্ধ করে ওই ঘাটে যাতে আর কোন নৌকা না ভিড়তে পারে এজন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সাথে অতি অল্প সময়ের মধ্যে পাহারসম বালুর মজুদ সরিয়ে নেয়ার জন্য আদেশ জারী করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব রায়হানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ড্রেজার মেশিন ইতোমধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। হার্ডিঞ্জ সেতুর সন্নিকটে নৌকায় নিয়ে আসা বালুর লোডিং ও আনলোডিং বন্ধ করার সাথে বালুর নৌকা ওই ঘাটে আসার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এসময় অতিস্বত্বর বালুর মজুদ সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, ইতোপূর্বে এই বালুমহলে ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক নিলাম ডাকের মাধ্যমে এনাম বিশ্বাসের নিকট বিক্রয়কৃত বালু বিক্রয়ের জন্য জেলা প্রশাসক স্যারের নিকট আবেদন জানিয়েছেন।
এব্যাপারে বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রক পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পাকশী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের অপারেশনের পর এখানে বালু তোলা বন্ধ রয়েছে। রাতের আঁধারে নৌকায় করে নিয়ে আসা বালু চুপেচাপে হয়ত কেউ কেউ ক্রয় করে। এটা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। ইতোপূর্বে নিলামে ক্রয়কৃত বালু বিক্রির জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট সময়ের আবেদন জানালে তিনি আমাকে বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছেন। কতোদিনের মধ্যে বিক্রির সময় দিয়েছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার কোন সময় নির্ধারণ করেননি।
এব্যাপারে পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউএনওকে নদী দখল করে বালুর পাহার অপসারণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইউএনও কাজও শুরু করেছে। ওইখানে আর বালুর ব্যবসা করতে দেয়া হবেনা বলে তিনি জানিয়েছেন। নিলামের বালু বিক্রির জন্য এনাম বিশ্বাসের আবেদন প্রসংগে তিনি বলেন, ওই বালু বিক্রির জন্য এখনও কোন সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। তবে দুয়েক দিনের মধ্যে সময় নির্ধারণ করে দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত: গত ২৮ শে জানুয়ারী সরকারি জায়গা দখল করে বালু ব্যবসা বন্ধ করতে পদ্মা নদীর তীর থেকে জব্দ করা বালু নিলামে বিক্রি করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিহাব রায়হানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনুজা মন্ডল, রিফা আসমা, নাজমুস সাদাত ও সাইদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য এসময় উপস্থিত ছিলেন। বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রক এনাম বিশ্বাসের কাছেই নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৩২ লাখ টাকায় জব্দকৃত বালু এসময় বিক্রি করা হয়। ছয়মাসেরও অধিক সময় ধরে ওই বালুর ঘাট হতে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে বালু বিক্রি হলেও নিলামে ক্রয়কৃত বালুর মজুদ শেষই হচ্ছে না। ছয় মাস পরও মজুদ পূর্বের অবস্থায় রয়েছে।