করোনাকে জয় করে প্রায় এক মাস পর অফিসে বসলেন নওগাঁর সাপাহারের জনবান্ধব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কল্যাণ চৌধুরী। দ্বিতীয় বার নমুনা টেস্ট রিপোর্টের ভিত্তিতে ২০ জুলাই তাকে সুস্থ ঘোষণা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। ২ জুলাই তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছিল।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস প্রার্দভাবের প্রথম থেকে উপজেলাকে ঝুঁকি মুক্ত রাখতে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজে শুরু করেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিদিন সকালে থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের পাড়া মহল্লায় সহ সদরের হাটবাজার ও বিভিন্ন দোকানপাট, বিপণী বিতানগুলোতে নিজ হাতে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করণ। লকডাউনে প্রবাসীসহ সাধারণ জনগণকে ঘরে ফেরানো, ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করা, কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মনিটরিং করা সহ জনসচেতনতা মূলক বিভিন্ন কাজ করেন তিনি। দেশের এমন পরিস্থিতিতে জনগণের পাশে থেকে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি হতদরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত কিংবা অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য দিনে রাতে ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। আক্রান্ত হওয়ার আগে করোনা রোগীদের ঘরে খাদ্যসহায়তা ও ফল ফলাদি পৌঁছে দেয়াসহ প্রায় তিন মাস দিন-রাত বিরামহীন ছুটে বেড়িয়েছেন জনবান্ধব ইউএনও কল্যাণ চৌধুরী। নিজের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরও তিনি দায়িত্ব থেকে নিবৃত্ত হননি। সরকারি বাস ভবনের নিচতলায় আইসোলেশনে থেকে দাপ্তরিক কাজ ছাড়াও অন্য আক্রান্তদের খোঁজখবর নেওয়াসহ করোনা প্রতিরোধ কমিটির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন তিনি।
এসব বিষয় নিয়ে সরাসরি কথা হয় ইউএনও কল্যাণ চৌধুরী’র সাথে। তিনি জানান, গলা ব্যথা, জ্বর ছাড়া তেমন কোনো উপসর্গ ছিল না। ২৩ জুন নমুনা স্যাস্পল টেস্টের জন্য পাঠানো হলে ২ জুলাই করোনা পজিটিভের কথা জানানো হয়। এরপর প্রায় এক মাস কোয়ার্টারের নিচতলায় সবকিছু আলাদা করে আইসোলেশনে থেকেছেন। ১৪ জুলাই দ্বিতীয়বার নমুনা দেওয়া হলে পরীক্ষার ফল ১৭ জুলাই নেগেটিভ আসে। এবং ২০ জুলাই উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ হতে পুরোপরি সুস্থ ঘোষণা করা হয়।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, পরিবারসহ স্বজন আর শুভানুধ্যায়ীদের অনুপ্রেরণা আর ভালোবাসায় করোনাকে জয় করেছেন। প্রায় এক মাস পর রোববার ২৬ জুলাই থেকে নিয়মিত অফিস করবেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২২ জুলাই পর্যন্ত এ উপজেলায় মোট সংগ্রহীত ৯০০ টি নমুনার পরিক্ষার বিপরীতে প্রাপ্ত ফলাফলে ১১৩ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৬৩ জন।