বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে সীমিত আকারে যথাযোগ্য মর্যাদায় নেত্রকোনার কলমাকান্দায় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস পালিত হয়েছে।
রোববার সকালে নাজিরপুর স্মৃতিসৌধ ও লেংগুরা ইউনিয়নের ফুলবাড়ী এলাকায় সাত শহীদের সমাধীস্থলে শহীদদের প্রতি গার্ড অব অনার, পুস্পস্তপক অর্পন, বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য মানু মজুমদার। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, ৩১ ব্যাটালিয়নের সহঅধিনায়ক মেজর নুরুন্নবী মাকসুদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা, সহকারি পুলিশ সুপার (দুর্গাপুর সার্কেল) শারমীন সুলতানা নেলী, নেত্রকোনা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক ইউনিট কমান্ডার নুরুল আমীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন আজাদ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সুলতান গিয়াস উদ্দিন ও কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করীম প্রমূখ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সকালে দুর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে কলমাকান্দায় পাকহানাদার ক্যাম্পে রসদ যাবার খবর পেয়ে নেত্রকোনা অঞ্চলের কোম্পানী কমান্ডার নাজমুল হক তারার নেতৃত্বে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল অবস্থান নেয় নাজিরপুরে। যা টাইগার দল নামে পরিচিত ছিলো। নদীপথে পাক বাহিনী নাজিরপুর নামক স্থানে আসতেই শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ। এতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন সাত জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের লেংগুড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়ী সীমান্তে ১১৭২ নং পিলার সংলগ্ন এলাকায় সমাহিত করা হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন ডা. আব্দুল আজিজ (নেত্রকোনা), মো. ফজলুল হক (নেত্রকোনা), মো. ইয়ার মাহমুদ (মুক্তাগাছা), ভবতোষ চন্দ্র দাস (মুক্তাগাছা), মো. নুরুজ্জামান (মুক্তাগাছা), দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস (মুক্তাগাছা) ও মো. জামাল উদ্দিন (জামালপুর)। যুদ্ধের এই ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই লেংগুরার পাহাড়ি নদী গণেশ্বরী পাড়ে ফুলবাড়ী সীমান্তে ১১৭২ নং পিলার সংলগ্ন এলাকায় সাত শহীদের স্মরণে স্থাপিত হয় স্মৃতিফলক।