ম্যাংগো এক্সপ্রেসের পর এবারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কোরবানির পশু ট্রেনে পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এই সার্ভিসের জন্য পশ্চিম রেলের পাকশী বিভাগ হতে ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’ চালুর সকল প্রস্ততি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে বলে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) আসাদুল হক সোমবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন। আসন্ন কোরবানি ঈদ উপলে ঢাকা ও চট্রগ্রামের বাজারে গরু, মহিষসহ কোরবানির অন্যান্য পশু স্বল্পতম সময়ে ও কম খরচে পৌঁছাতে এবং বিক্রেতা-ক্রেতাদের সুবিধার্থে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্পেশাল ক্যাটল ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ।
ডিআরএম আসাদুল হক জানান, ইতোমধ্যেই ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনের ওয়াগন প্রস্তুত করা হয়েছে। ট্রেনে বায়ু চলাচলের জন্য চার দরজা বিশিষ্ঠ ৫-৬টি বিসি ওয়াগন থাকবে। চাহিদার সাথে ওয়াগন সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। একটি ওয়াগনে ১৬-২০টি গরু/মহিষ অবস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ১টি করে ট্রেন ঢাকা অভিমুখে চলাচল করবে। এই ট্রেনে পাকশী বিভাগের মোবারকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ কুষ্টিয়া ও উল্লাপাড়া স্টেশন থেকে কোরবানির পশু উঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি পশুর জন্য ভাড়া পড়বে আনুমানিক ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকা। তবে ভাড়ার বিষয়টি এখনও চুড়ান্ত হয়নি। ওইসব স্টেশনের নিকটস্থ এলাকার খামারীরা ও গরু ব্যবসায়ীরা যাতে করোনা পরিস্থিতিতে স্বল্প খরচে তাদের পশু বাজারজাত করে ন্যায্যমূল্য প্রাপ্ত হয়, সেই লক্ষ্যেই সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। বিলম্ব ছাড়াই ট্রেন চলাচলের জন্য দুটি রেকও গঠন করা হয়েছে। ক্যাটল ট্রেনে ঢাকা পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র ৯ থেকে ১২ ঘণ্টা। পরিকল্পনা গ্রহনেরর সাথে সাথে সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করে রাজশাহী জিএম কার্যালয়ে প্রস্তাবনা ১২ই জুলাই পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এলাকার খামারী ও ব্যবসায়ীদের চাহিদা পেলে তাৎক্ষনিকভাবে ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’ করা চালু সম্ভব হবে।
পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, প্রতি বছর কোরবানির ঈদে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোরবানির পশু ঢাকা, চট্রগ্রামের বাজারে তোলা হয়। রোদ কিংবা বৃষ্টির পানি যাতে ওয়াগনের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে গবাদি পশু অসুস্থ্য হয়ে পড়ার কোন সুযোগ থাকবে না। গরমে অসুস্থ হওয়ার হাত হতে রক্ষার্থে দিনের পরিবর্তে রাতে পশু ভর্তি ট্রেন চালানো হবে। পথিমধ্যে গবাদিপশু অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের মাধ্যমে চিকিৎসাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদি পশুর সাথে পরিচর্যাকারীগণের একই ওয়াগনে যাওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এতে পশু ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।
রেলপথে কোরবানির পশু নেওয়া হলে সড়ক পথে যানজট কম হবে। অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া পশু ব্যবসায়ীরা রাস্তায় চাঁদাবাজির হাত থেকে রক্ষা পাবে। বর্তমান সময়ে সীমিত আকারে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্যাটল স্পেশালট্রেন ঢাকায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে।