পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মিনা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ তুলে অভিযুক্তদের সনাক্ত করে বিচারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ শনিবার ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদরের বকুলতলা এলাকায় নিহতের স্বজন ও শতাধিক গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে সকাল ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গৃহবধূ মিনা খাতুন উপজেলার মুন্ডুতোষ ইউনিয়নের মুন্ডুতোষ গ্রামের আব্দুল খালেকের স্ত্রী। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিহতের মামাতো ভাই কারিম হোসেন, খালা শিল্পী খাতুন ও ওই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নুর ইসলাম মিন্টু। এছাড়া ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রায় ১৬ বছর আগে মুন্ডুতোষ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুল খালেক তার চাচাতো বোন মিনা খাতুনকে বিয়ে করেন। মিনা তার বাবা মন্তাজ আলীর একমাত্র সন্তান। মন্তাজ আলী গ্রামের মাঠে ১২ বিঘা ফসলি জমির মালিক ছিলেন। এতে বিয়ের পর থেকেই আব্দুল খালেক শশুরের সম্পত্তি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু মন্তাজ আলী তার সম্পত্তি জামাইকে না দিয়ে মেয়ের নামে লিখে দেন। এরপর ওই সম্পত্তি আব্দুল খালেক নিজের নামে লিখে নিতে মিনাকে নির্যাতন শুরু করে। কিন্তু মিনা সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হয় নাই। এতে আব্দুল খালেক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে ৫ বছর আগে আরেকটি বিয়ে করে বউকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। কিন্তু এতেও ক্ষান্ত হয়নি আব্দুল খালেক। মাঝেমধ্যেই বাড়িতে এসে মিনাকে নির্যাতন করতো সে। আব্দুল খালেক দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তবে আব্দুল খালেকের নির্দেশে গ্রামের বাড়িতে থাকা তার ছোট ভাই শানিল হোসেন (২৮) সহ বাড়ির অন্যরা মিনাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। সম্প্রতি মিনাকে নির্যাতন করে হাত ভেঙে দেয় শানিল। একপর্যায়ে গত সোমবার বাড়ির লোকজন মিনাকে শারীরিক নির্যাতন করে মেরে ফেলে। হত্যার বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালাতে পরে মিনার মরদেহ রান্নাঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ মিনার স্বজনদের।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে থানা পুলিশ মুন্ডুতোষ গ্রামের শশুর আবুল হোসেনের রান্নাঘর থেকে পুত্রবধূ মিনার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঐদিন থানায় এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, মানববন্ধনের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে গত সোমবার মিনা খাতুন নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছিল। ওই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।