সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলার মধ্যে প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার ওয়াশীন গ্রামের কৃতি সন্তান সরকার বাড়ীর মরহুম বাহাউদ্দীন মাষ্টাররে বড় ছেলে, ইসলামী ব্যাংক রংপুর শাখার ম্যানেজার রেজাউল ইসলাম ও ঢাকায় খ্যাত ফিজিও রফিকুল ইসলামের বড় ভাই আমাদের সকলের আস্থার বাতিঘর নির্লোভ সেবক এস এম সাইফুল ইসলাম মজনু বুধবার রাত ১১.১০ মিনিটে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার ধানমন্ডি আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। তিনি বর্তমানে মেডিনোভা (ধানমন্ডি) এবং আলমানার (লালমাটিয়া) হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
সকল মৃত্যুই কষ্টের, বেদনার।তবুও কিছু মৃত্যু মানুষকে বেশি করে নাড়া দিয়ে যায় তাদের ব্যতিক্রম কিছু কাজের জন্য। চিকিৎসা সেবা পাবার জন্য এলাকার মানুষের কাছে তিনি ছিলেন আস্থারস্থল। এলাকার যারা ঢাকায় চিকিৎসা নিতে যেতেন তাদেরকে উনি খুবই আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতেন। কতভাবে যে মানুষের উপকারে আসা যায় উনাকে না দেখলে জানা যেতোনা। উনি সৌদি আরবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন। এলাকার যারা হজ্বে যেতেন উনি তাদের খোঁজ খবর নিতেন,সহযোগিতা করতেন। ফিরে এসে তারা উনার খুব প্রশংসা করতেন আর দোয়া করতেন। এত নিরহংকার মানুষ খুব কমই হয়। হিংসা বিদ্বেষ তাঁর মনে কখনও স্থান পেতে দেখিনি। অত্যন্ত স্নেহ সহকারে এলাকার যুবকদের বিভিন্ন উপদেশ দিতেন। এত নিরহংকার মানুষ খুব কমই হয়। হিংসা বিদ্বেষ তাঁর মনে কখনও স্থান পেতে দেখিনি।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত উনি এলাকার মানুষের জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রান। উনার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে শুধু তাড়াশ নয় সিরাজগঞ্জ বাসী হারালো এক কৃতি সন্তান। উনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৩০তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ঔ সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাবনা জেলা তথা সিরাজগঞ্জ মহুকুমার যে দু একজন ছাত্র পড়া লিখা করতেন তার মধ্যে উনি ছিলেন অন্যতম । কর্ম জীবন শুরু করেন সরকারী চাকুরীতে প্রবেশের মধ্যে দিয়ে। ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিনের রেজিস্ট্রার পরবর্তীতে উল্লাপাড়া পুর্নিমাগাতী থানা সদরের মেডিকেল অফিসার ছিলেন। এসএসসি পাবনা জেলা স্কুল, এইচএসসি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র ছিলেন। এইচএসসিতে বোর্ড স্ট্যান্ড করেন। উনিই তাড়াশ থেকে সর্ব প্রথম মেডিকেলে স্থান পান। ছোট বেলা হতেই একজন ধর্ম পরায়ন মানুষ হওয়ার জন্য উনি এমবিবিএস শেষে জাপান ও সৌদিতে স্কলারশিপ পান।
পরবর্তীতে সৌদি গমন করে দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে সৌদি সরকারের একজন প্রতিভাবান, নিবেদিত চিকিৎসক হিসাবে সৌদি জনগন ও হাজীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। ৮০ ও ৯০ এর দশকে যেনারা পাবনা, নাটোর ও আমাদের সিরাজগঞ্জের হজ্জ পালন করতে সৌদিতে গেছেন উনার আতিথিয়েতা পাননি এমন মানুষ নেই। দেশে ফিরে উনি ফুয়াদ আল খতিব হসপিটাল, মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক ও আল মানার হসপিটাল-ঢাকা এর ডায়াবেটিস চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। উনার এক ছেলে ও এক মেয়ে দুজনই চিকিৎসক।
তাড়াশ সমিতি ঢাকা’র সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজিম হায়দার আবেগে বলেন ,তিনি ছিলেন তাড়াশ সমিতি ঢাকা’র প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা এবং আলমানার হাসপাতাল এবং মেডিনোভাতে কর্মরত ছিলেন। নিরিবিলি হাউজিং সংকর, ঢাকা তার বাসা । তাড়াশ উপজেলার একজন ভদ্র,ন¤্র ও আদর্শবান ব্যক্তিত্ব,অত্যন্ত প্রবীন এবং তাড়াশের প্রথম এমবিবিএস ডাক্তার সাইফুল ইসলাম আর আমাদের মাঝে নাই। মেনে নিতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম রাব্বানী বলেন, এস এম সাইফুল ইসলাম মজনু আমার আত্মীয় বটে সম্পর্কে মামা হন। উনার এক ছেলে ও এক মেয়ে দুজনই চিকিৎসক। উনি আমাকে সর্বদা সৎ পরামর্শ দিতেন। উনার মৃত্যুতে আমি একজন নির্ভরশীল অভিভাবক হারালাম। আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাত দান করেন।