নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়ায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে স্ত্রীর
উপর শারিরিক, মানসিক নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাসরিন বানুর বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছেন তাঁর স্ত্রী নুরুন্নাহার।
পরিবার সুত্র ও অভিযোগে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৩ আগষ্ট বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের পর নুরুন্নাহার জানতে পারেন এর আগে তাঁর দুটি বিয়ে হয়েছিলো। চারিত্রিক অবক্ষয় এবং যৌতুকলোভির কারনে দুটি বউ তালাক হয়েছে।
নুরুন্নাহারের সাথে বিয়ের পর মেসেনজারে তাঁর স্বামীর সাথে বিভিন্ন মেয়ের অশালিন চ্যাট বন্ধ করার কথা বলার পর থেকে তাঁর উপর নেমে আসে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে নতুবা অন্যজনকে বিয়ের কথা বলতে থাকে। গত ৮ মে তাঁর নিজ বাড়ি পুঠিয়ায় স্ত্রীকে অমানুসিক নির্যাতন করে। পরে তাঁর বাবাকে ফোনে আসতে বলে ঐদিন নুরুন্নাহার ও তাঁর বাবাকে আটকে রাখে। পরবর্তিতে সাদা স্ট্যা¤েপ সই নিয়ে ছেড়ে দেয়। ১৪ জুন সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর নুরুন্নাহার অভিযোগ দিতে এলে বিষয়টি টের পেয়ে নুরুন্নাহার কে শাসন গর্জন করে। ঐদিন দুপুরে
বাড়ি যাবার পথে থাঔল বাজারে তাদের পথরোধ করে নুরুন্নাহার ও তাঁর বাবাকে কিলঘুষি
সহ অভিযোগের কপি ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করে। এসময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে
তাদের উদ্ধার করে।
জানা যায়, ইফার সুপারভাইজার হাসানুজ্জামান এর ফেসবুক আইডি ও মেসেনজার
রয়েছে। সে মেসেনজার ব্যবহার করে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে অশালিন চ্যাট করে। সে শিক্ষিকাদের ফোনে কু প্রস্তাবসহ অনৈতিক স¤পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছে।
এর আগে তাঁর অত্যাচার ও যৌতুকলোভীর কারনে পরপর দুটি বউ তালাক হয়। সুপারভাইজার হবার সুবাদে শিক্ষিকাদের চাকুরির নানা ভয়ভীতি, বেতন বন্ধের ভয় দেখিয়ে স¤পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে।
আরো জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষের দিকে সিংড়া অফিসে যোগদান করেন হাসানুজ্জামান। তাঁর প্রথম বউ সালমা, দ্বিতীয় বউ খাদিজা। তাঁর আচার আচরন এবং যৌতুকলোভির কারনে পরপর দুটি সংসার টিকেনি।
হাসানুজ্জামানের স্ত্রী নুরুন্নাহার জানান, আমি ২০১৭ সালের ১ লা জানুয়ারীতে যোগদান করি। ২০১৯ সালের শেষের দিকে হাসানুজ্জামান সিংড়া উপজেলার সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর কেন্দ্রে গিয়ে পরিচয় হয় এ সুবাদে তাঁকে ফোন
দেয়। আমার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে একসময় বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ২০১৯ সালের ১৩ আগষ্ট
১ লক্ষ টাকার দেনমোহরে বিয়ে করেন। বিয়ের রাতে ১ লক্ষ টাকার চেক দেন। পরে সে চেকটি
ফেরত নেন। বিয়ের পর হতেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। বাড়ি, পুকুর, জমি লিখে দেবার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিছুদিন পর আমার পেটে বাচ্চা আসে কিন্তু তার কয়েকদিন পর হাসানকে এই কথা জানালে ও বলে বাচ্চা নষ্ট করে দে তোর পেটের বাচ্চা নিবনা। আগে ৫ লক্ষ টাকা দে। আমি রাজি হইনা তখন বলে তোর বাপের তো স¤পদ আছে মানুষ কর,তবু
সংসার করবো জন্য তাঁর নির্যাতন সহ্য করে শশুরালয়ে যাই। যাওয়ার ১৫দিন যাবত আমার
বাড়ির কারো সাথে কোনো কথা নাই। তাঁর ফোনে আমার বাড়ি থেকে ফোন দিলে ধরেনা,
কথা বলতে দিতনা। এর মধ্য ওর দেওয়া গহনা আমার কাছে ওয়েডরপে ভিতরে রেখে তালা দেওয়া ছিল।
আমি চাবি না দেয়ায় তালা ভেংগে গহনা বের করে নেয়, বাধা দিলে আমাকে খুব মারে।
পেটে লাথি,বুকের উপর উঠে খুঁচে, গলা টিপে ধরে,ওরনা দিয়ে পা বেধে নির্যাতন করে।
ঘটনা শুনতে পেরে আমার আব্বা গেলে তাঁর গায়েও হাত তুলে এবং আটকিয়ে রাখে। পরে
জোড়পূর্বক একটি কাগজে সই নিয়ে আমি আমার আব্বার সাথে বাড়ি চলে আসি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত হাসানুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সে আমার স্ত্রী, তাঁর সাথে কিছু বনিবনা রয়েছে। তবে অভিযোগ সত্য নয়।
সিংড়া থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দীকি জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।
বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।