পাবনা প্রতিনিধি : বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক বাঁচাতে শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে পাবনায় বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা ১০টায় দুলাই বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পাবনা জেলা বিড়ি মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি মো. হ্যারিক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক দুলাল শেখ, আলম শেখ প্রমুখ।
এসময় পাবনা জেলা বিড়ি মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি মো. হ্যারিক হোসেন বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতি প্যাকেট বিড়িতে মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪ টাকা। যা শতকরা বৃদ্ধিহার ২৮.৫৭ %। অপরদিকে কমদামী সিগারেটে প্রতি প্যাকেটে দাম বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২টাকা। যা শতকরা বৃদ্ধির হার মাত্র ৫.৪১ %।
অর্থাৎ সিগারেটের চেয়ে বিড়িতে প্যাকেট প্রতি ২টাকা বেশি এবং শতকরা ২৩.১৬% বেশি। এটি বিড়ি শিল্পের উপর চরম বৈষম্যমূলক আচরণ। বিদেশী সিগারেট কোম্পানীকে সুবিধা দিতেই এ বৈষম্য করা হয়েছে। যা দেশীয় শিল্পের সাথে বিমাতাসূলভ আচরণ ছাড়া কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিড়ি শিল্প ধ্বংস করার জন্য যে গভীর ষড়যন্ত্র ছিল প্রস্তাবিত বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে।
সরকার একদিকে মুখে ধূমপান বন্ধের কথা বললেও সিগারেটের বাজার সহজলভ্য করে দিয়েছে। ফলে সরকার ধূমপান মুক্ত করার জন্য যে ঘোষণা দিয়েছে তার পরিবর্তে সিগারেটের ভোক্তা বৃদ্ধি পাবে বৈ কমবে না।
বাস্তবে বিদেশী সিগারেট কোম্পানীর সাথে সরকারের অংশিদারত্ব না ছাড়লে আমলাতান্ত্রিক প্ররোচনায় সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা কখনোই সম্ভবপর হবেনা।
সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম ইসলাম বলেন, মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম বৃদ্ধি করা হয়নি। পাশাপাশি বেশি দামী সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি না পাওয়ায় কোম্পানীর আয়ের সীমা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকার বেশি ট্যাক্স প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিড়ি শিল্পের উপর যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে তা এ শিল্পের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ। এরফলে বিড়ি ফ্যাক্টরী সংখ্যা কমে যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে পড়বে লক্ষ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক। যার ফলে শ্রমিকরা করোনায় আক্রান্ত না হয়ে অনহারেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হবে। এছাড়াও নকল বিড়ি বিক্রয় বৃদ্ধি পাবে। সরকার রাজস্ব হারাবে।
এসময় বিড়ি শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিড়ি শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি, বিড়ির উপর শুল্ক কমানো, কমদামী সিগারেট ও বেশী দামী সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি, বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরী না করে বিড়ি শিল্পের ক্ষতি বন্ধ, নকল বিড়ির ব্যবসা বন্ধ, ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন, করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের আর্থিক প্রণোদনাসহ বিভিন্ন দাবি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তুলে ধরেন।