মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ৮নং
মনসুরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন বখত এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য সুফিয়া বেগেম।
লিখিত বক্তব্য তিনি জানান- গত ২৩ মে ৮নং মনসুরনগর ইউনিয়নে গরীব অসহায় দুস্থদের ত্রান বিতরণ করতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের হাতে মহিলা ইউপি সদস্যা শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েছেন। এ ঘঠনায় চেয়ারম্যন মিলন বখত, তার সহযোগী পরকিছ মিয়াসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে রাজ নগর থানায় মামলা ( নং- ১৬,তারিখ ঃ ২৪/০৫/২০২০ইং) দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর
থেকে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য একাধিকবার হুমকি দিচ্ছেন চেয়ারম্যানসহ তাদের লোকজন। এহেন অব্যাহত হুমকির কারণে আমিসহ
আমার পরিবার তাদের ভয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছিনা।
চেয়ারম্যান প্রভাবশালী থাকার কারণে রাজনগর থানার পুলিশও আসামীদের গ্রেফতারের জন্য কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করছেনা। আমার মামলা দায়েরের ২দিন পর অর্থাৎ গত ২৬/০৫/২০২০ইং আমার সহজ সরল ২টি ছেলেকে আসামী করে রাজনগর থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। উলেখ্য- বিগত
২২/০৫/২০২০ইং তারিখ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আমাকে ২০ জন ত্রাণ গ্রহণকারী লোকের নাম দাখিলের জন্য বলেন। কিছুক্ষণ পর মোবাইল ফোনে
আবার আমাকে জানান, ৩০ জন এর নাম দেওয়া যাবে। আবার আরো কিছুক্ষণ পর মোবাইল ফোনে বলেন, ৩০জন নয় ২০ জন এর নাম দিতে হবে। আমি
সচিবকে এভাবে বার বার ভিন্ন কথা বলার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে সচিব আমাকে জানান যে, চেয়ারম্যান মিলন বখত এর নির্দেশে বার বার তালিকা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। বিগত ২৩/০৫/২০২০ইং তারিখ রোজ শনিবার সকাল
১০.০০ ঘটিকার সময় ইউনিয়ন পরিষদে ত্রাণ বিতরণের জন্য আসি এবং পরিষদের সচিবের কক্ষে বসে ত্রাণ গ্রহণকারী লোকের মাষ্টার রোল কপি
সংগ্রহ করে দেখার সময় চেয়ারম্যান মিলন বখত আসিয়া ঘটনাস্থলে আমাকে চেয়ারে বসা দেখিয়া উত্তেজিত হয়ে অকত্য ভাষায় গালিগালাজ
করিতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করিলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার তলপেটে লাথি মেরে চেয়ার থেকে নিচে ফেলে
দেন। এ ঘঠনায় ভুক্তভোগী সুফিয়া বেগম বিগত ২৪/০৫/২০২০ইং চেয়ারম্যান এর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্ণীতি ও তার উপর নির্যাতন এর ঘঠনার
বিবরণ উলেখসহ মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন।
অপরদিকে- বিজিএফ কার্ড, করোনা মহামারি উপলক্ষে ২ হাজার ৫শত টাকা
বিতরণে অনিয়ম ও আতœসাৎ, সরকারি গুদামের কৃষকদের ধান বিক্রির ব্যপারে কৃষি কার্ড নিয়ে বানিজ্য, হতদরিদ্র কর্মস্থান কর্মসূচি অনিয়ম,
এলজিএসপির বাণিজ্য, আরএমপি প্রজেক্ট মহিলা নিয়োগ, সরকারি কৃষি প্রজেক্টের ভর্তুকি, জেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত করোনা মহামারিতে ত্রাণ বিতরণ,
ইউনিয়নের বিভিন্ন কাজের বিল ইউপি সদস্যদের নামে করে অর্থ আতœসাৎ সহ গুরুত্বপূর্ণ ১৭টি অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করেছেন
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ইউপি সদস্যরা। অভিযোগে জানাযায়- ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ইউপি সদস্য
আবদুর রহিম রেনুর ০৬ নং ওয়ার্ডের হত দরিদ্রের ৫০ টি নামের তালিকা ছিল।
চেয়ারম্যান সে চাল না দিয়ে মাস্টার রোল তৈরি করেন। এখন ইউপি সচিবের মাধ্যমে মাস্টার রোলে স্বাক্ষর করার জন্য ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম রেনুকে চাপ সৃষ্টি করছেন। ভূমিউন্নয়ন কর, ইজিবি, আরএমপি, এলজিএসপি, যুব উন্নয়ন কর্মসূচী, ভিজিএফ, কৃষি কার্ডের নাম লিস্ট করা, কৃষি
কার্ডের মাধ্যমে সরকারি ধান দেওয়া, বয়ষ্ক ভাতায় বয়ষ্ক বা বিধবা নয় এমন ব্যাক্তিদেরকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আরএমপি প্রজক্টের মহিলাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে নীতি ভঙ্গ করে তার সিন্ডিকেট বাহিনীর প্রধান ও অন্যতম সদস্য পরকিসকে দিয়ে সবার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ ঘুষ নেন। অত্র ইউনিয়নে
পরিষদের সদস্য মামুনুর রশিদ মামুন ৩নং ওয়ার্ড, কার্তিক দেব ৫নং ওয়ার্ড, জাহাঙ্গির মিয়া ৭নং ওয়ার্ড, সবজ্জ্বুল খান ৪নং ওয়ার্ড, হাজেরা
বেগম ১,২ ,৩ নং ওয়ার্ড, রোশনা আক্তার ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড, ইউনিয়নের উদ্যোক্তা অমৃত দেব, চেয়ারমেনের পালিত পেটুক বাহিনী পরকিস মিয়া,
অলিদ মিয়া,রতন দাশ,শামাউন আহমদ, নাইয়র মিয়া, লেচু মিয়া লোকদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদে আসা সরকারি
ত্রাণ করোনা মহামারি মানবিক সহায়তা প্রকল্পে প্রধাণমন্ত্রীর দেওয়া ২ হাজার ৫ শত টাকা ও প্রত্যেক মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের টাকা, বিজিএফ এর চাল সিন্ডিকেট এর মাধ্যমে সাধারণ জনগন কে না দিয়ে তার নিজের কিছু লোকদের দিয়ে বাকি সবটুকু আত্মসাৎ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর
মানবিক সহায়তা প্রকল্পের তালিকায় বয়ষ্ক ভাতা প্রাপ্ত শফা উদ্দিন ১ নং ওয়ার্ডের তার নাম দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা পায় চেয়ারম্যানের মনোনিত সচ্ছল
একজন ব্যাক্তি ওয়ার্ড মেম্বার এ বিষয়ে কিছু জানেন না। মহলাল গ্রামের একই পরিবারের লোকমান মিয়া, জামাল মিয়া, কাওছার মিয়া মানবিক সহায়তা প্রকল্পের টাকা পায়। করোনা মহামারি উপলক্ষে রেডক্রিসেন্টের দেওয়া ত্রাণ তার সিন্ডিকেটদের নিয়ে সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেন। চেয়ারম্যান তার
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষকদের কার্ড কিনে নেন। রহস্য জনক ভাবে লটারিতে চেয়ারম্যান এবং তার সিন্ডিকেটের কেনা কার্ড গুলো বার বার
উঠে আসে। ২০১১ সাল এ পর্যন্ত এসআর এর টাকা প্রাপ্তর ব্যাপারে তার সিন্ডিকেট ছাড়া বাকি ইউপি সদস্যদের সাথে কোন আলোচনা করেননি।
এসআর এর টাকা তিনি নিজের খাতে ব্যয় করে থাকেন। চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতা খাটিয়ে সরকারি টাকার অপব্যবহার করে কুলাউড়া রোডে চাটুরা
কেনেল নামক স্থান থেকে নিজ বাড়ি পর্যন্ত আরসিসি ডালাই একক টেন্ডারের মাধ্যমে নিজ সুবিধার্থে রাস্তা নির্মাণ করেন। ঐ রাস্তার সাইট ভরাটের কাজ হতদরিদ্র ৪০ দিনের কর্র্মসূচি মাধ্যমে সাইট ভরাট
করান যা সরকারি অর্থ ব্যয়ে করা হয়। মৌলভীবাজার, রাজনগর-৩ আসনের এমপির দেওয়া ঈদ উপহার ১ টন চাল ও ১০ হাজার নগদ টাকা হতদরিদ্র একশত
জনকে দেওয়ার কথা, কিন্তু চাল বিতরণে অনিয়ম করা হয় ও কেউ নগদ টাকা পাননি। বড় অংকে ঘোষের বিনিময়ে উত্তারধীকারি সার্টিফিকেট দেন,
পঞ্চেশ্বর গ্রামের মৃত হরেন্দ্র বিশ্বাসের পূত্র ও বড়কাপন গ্রামের মৃত বষ্কিম চক্রবর্তির ছেলে সরোজ চক্রবর্তি ছেলেকে। তার সহযোগী ইউপি সদস্য
মামুনুর রশিদ মামুন ৩০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বাড়িতে একটি ঘর নির্মাণ করেছেন। একই বাড়িতে ২টি ডীপ টিউবওয়েল (গভির নলকূপ) স্থাপন করেন।
এছাড়াও সরকারি কৃষি প্রজেক্টের ভর্তুকি ধানের মেশিন, সেচ পাম্প, ভুয়া কৃষকের নাম ব্যবহার করে নিজে আতœসাৎ করেন। এ ব্যপারে জানতে চাইলে
৮নং মনসুর নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলণ বখত জানান- আমার উপর দায়েরকৃত মামলা ও আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। মহিলা সদস্য সুফিয়া বেগম এর সন্ত্রাসীপুত্র আমার ইউনিয়নে গিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়েছে। নগদ টাকা ও চেক
ছিনিয়ে নিয়েছে। তিনি অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন- মামুন নামের একজন আমেরিকা প্রবাসীকে মহিলা সদস্য এর পুত্র বিভিন্ন ভাবে
নির্যাতন করতঃ। এ বিষয়ে গ্রাম্য লোকজন একাধিক সালিশ বৈঠক করে ব্যর্থ হয়েছেন। আমেরিকা প্রবাসী পরিবার সর্বশেষ আমার হস্তক্ষেপ
কামনা করলে আমি বিষয়টি স্থায়ীভাবে মীমাংসার উদ্যাগ গ্রহণ করি। এবং আমার পক্ষ থেকে স্থানীয় কিছু গন্যমান্য লোকজনদের বিষয়টি দেখার জন্য
দায়িত্ব দেই। কিন্তু, মহিলা সদস্য তাদেরকে অশ্্িরল ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি এ বিষয়ে মহিলা সদস্যকে একটু শাষন করেছি। এসব ঘঠনায় তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এ সব অপপ্রচার করছেন।