দেশ ও মানুষের কল্যাণে আহমেদ আকবর সোবাহান

নাসিম উদ্দীন নাসিম: সমাজের সর্বত্র যখন অস্থিরতা, রাজনীতিবিদদের ইমেজ যখন নিত্তির  তলানিতে, ঠিক তখন মাথা উঁচু করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। মানুষের কাজই তার মানদন্ড তৈরী করে দেয়। সমাজ, দেশ, জনগণের মূল্যায়নে নির্ণীত হয় মানদন্ড। ব্যক্তি পরিচিত হয় মানদন্ডের ভিত্তিতে। আমাদের সমাজে নীতিবাচক মানুষের সংখ্যা অনেক। ইতিবাচক চরিত্র বা পজেটিভ চরিত্রের মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। তবে একবারে যে নেই তা নয়। আর আছে বলেই সমাজে বসবাসরত মানুষ আশায় বুক বাঁধে। দেশ ও মানুষের কল্যাণে যিনি সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন এমনই একজন মানুষ- আহমেদ আকবর সোবহান।
দেশে অনেক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। বিপদগ্রস্ত মানুষকে নিয়ে তাদের ভাবার সময় ও মানসিকতা তৈরী হয়নি। দেশে কোটিপতির সংখ্যা তো কম নয়। কিন্তু ক’জন গরীব, দুঃখী, বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসে?সামাজিক দায়বদ্ধতা আর মনোযন্ত্রণার আপন তাগিদে যে মানুষটি দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সেই দানশীল ব্যক্তিটি হচ্ছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে বসুন্ধরা গ্রুপ প্রথম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর করোনা তহবিলে ১০ কোটি টাকা প্রদান করে এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার শয্যার হাসপাতাল করার জন্য সরকার প্রস্তাব করেন। যার ফলশ্রুতিতে বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে আজ  আজ দেশের সবচেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল প্রতিষ্টা করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া করোনার শুরু থেকে ঢাকা সিটি সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মহীনদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ,বিমান বাহিনী সহ  সকল বাহিনীকে বিপুল পরিমাণ মাস্ক,গ্লোভস বিতরণ করেছেন।  চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় প্রদান করেছেন বিপুল পরিমাণ পিপিই সহ সুরক্ষা সরঞ্জাম। এছাড়া ঢাকায় কর্মরত সংবাদ পত্র হকারদের চারটি সংগঠনকে দিয়েছেন আর্থিক সহযোগীতা। এই দানশীল ব্যক্তিটি আমার মতো এক মফস্বল সাংবাদিকের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে নতুন জীবন ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ জন্য আমি এবং আমার পরিবার তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
আমরা যারা মফস্বল সাংবাদিকতার সাথে জড়িত। তারা প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুরুতর জখম বা অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার মতো কেউ থাকে না। নিজ প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে না। তখন নিজেকে কতটা অসহায় মনে হয় তা ভুক্তভোগীরা ভালভাবেই জানেন। সারা দেশে যেভাবে সাংবাদিক নির্যাতন বাড়ছে তাতে কলম শ্রমিকদের বিপদে বসুন্ধরা গ্রুপের মতো দেশের সকল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে এগিয়ে আসা উচিত।
তবে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান- সমাজসেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। সত্তরের দশকে দেশ ও মানুষের কল্যাণে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ দেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার মাধ্যমে পথচলা শুরু হয় বসুন্ধরা গ্রুপের। সৃষ্টি থেকে অদ্যবধি দেশ ও মানুষের কল্যাণে এই মহানুভব দানশীল ব্যক্তিটি যে সব মানবিক কাজ করেছেন সে সম্পর্কে কিছু না বললেই নয়। শুধু আমি নই, নিহত সাংবাদিক দ¤পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনির শিশু সন্তান মেঘসহ আরও ৫ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই সাংবাদিক বিভাস চন্দ্র সাহা ও শহীদুজ্জামান টিটুসহ মোট ৬ জনের জন্য বিভিন্ন অঙ্কের অনুদান ঘোষণা দেন তিনি। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের অনুদান পাওয়া মেঘের জন্য ১৫ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই সাংবাদিক বিভাস চন্দ্র সাহা ও শহীদুজ্জামান টিটু, মিরপুরে ছিনতাইকারীদের কবল থেকে দুই নারীকে রক্ষা করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের হামলায় নিহত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হযরত আলী, হরতাল চলাকালে খিলগাঁওয়ে বাসের মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় দুর্বৃত্তদের হামলায় পুড়ে মারা যাওয়া বাসচালক বদর আলীসহ প্রত্যেক পরিবারের সদস্যদের কাছে ২ লাখ টাকা এবং দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্মচারী সোহেলকে ১ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আহমেদ আকবর সোবহান।
বসুন্ধরা গ্রুপের সামাজিক কার্যক্রম সম্পর্কে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাবির সাবেক ভিসি একে আজাদ চৌধুরী বলেন, এটি অনুদান নয়, এটি বসুন্ধরা গ্রুপের সামাজিক দায়বদ্ধতা। আমাদের সমাজে বিত্তের অভাব নেই, অভাব শুধু চিত্তের। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের চিত্ত অনেক বড়। আর তাই তিনি দায়িত্ব মনে করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিক পরিবারসহ আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন। তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের এমন মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং এ ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। এছাড়া বিপন্ন মানুষের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের হাত সব সময় প্রসারিত থাকবে বলেও তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
এই অনুদান প্রদানের সময় বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ বরাবরের মতোই আর্ত ও বিপন্ন মানুষের পাশে থাকবে। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আমরা সাংবাদিক সাগর-রুনির শিশু সন্তান সহ ৬ জনের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, এর আগে আমরা সাংবাদিক পথিক সাহা, দীনেশ দাস ও সাংবাদিক নিখিল ভদ্র ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি।
আহমেদ আকবর সোবহান এ দেশে সুদ এবং সার্ভিস চার্জবিহীন ঋণের প্রবক্তা। এতদিন যারা মানবেতর জীবনযাপন করতেন, এখন তারাই ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পশুপালনের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন নতুন করে ৩৯৭ পরিবারের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করে। ২৬তম এ সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ করেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (ট্রেজারার) ময়নাল হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বাঞ্ছারামপুর থেকে দারিদ্য দূর করতে চান। দিনে দিনে এ কার্যক্রমের কলেবর বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঋণগ্রহীতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছে। শতভাগ ঋণ পরিশোধ করে আপনারা নজির সৃষ্টি করেছেন। আপনাদের এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে বলেও আশা করি। তিনি বলেন, এ ঋণের টাকা কোনো ভাবেই দাদনে খাটানো যাবে না। মাদকের সঙ্গে কারো সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাকে এ সুবিধা দেয়া হবে না। ঋণগ্রহীতাদের মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। সুদমুক্ত ঋণের টাকা পেয়ে খুশির কথা জানালেন উপজেলার দারিয়াচর গ্রামের বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জুলেখা বেগম, আয়েশা বেগমসহ অন্যরা। সকলেই বললেন, তারা আগেও কয়েক দফায় ঋণ নিয়েছেন। বসুন্ধরার ঋণে তারা দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পর থেকে রক্ষা পেয়েছেন।
জুলেখা বেগম জানান, হতদরিদ্র হওয়ায় তারা ব্যাংক থেকে ঋণ পান না। একইভাবে এনজিও ঋণের জটিল শর্ত পূরণ করাও তাদের পক্ষে কষ্টকর। আর দ্রুত ঋণ পাওয়া যেতো না। সে কারণে বাধ্য হয়েই তারা দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারস্থ হতেন। এতে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়নি। বরং দাদনের বেড়াজালে আটকে গিয়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে এলাকা ছাড়া হতে হয়েছে অনেক পরিবারকে বলেও দাবি করেন তারা।
আয়েশা বেগম বলেন বলেন, এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিলে পরের সপ্তাহ থেকে সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের টাকায় তিন মাস ব্যবসা করে মুনাফা দিয়েই কিস্তি দেওয়া যায়। সুদ দিতে হয় না। এ কারণে ঋণের টাকা মূলধন হিসেবে থেকে যায়।উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ২০০৫ সালে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ফাউন্ডেশন পশু পালন, ক্ষুদ্র ব্যবসাসহ ৩৩ খাতে হতদরিদ্র পরিবারকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে আসছে। উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ৬৩ গ্রামে ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে ফাউন্ডেশন। এ কার্যক্রম গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ময়নাল হোসেন চৌধুরী। ফাউন্ডেশনের এ ঋণ প্রদানের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন মাসে কোনো কিস্তি আদায় করা হয় না। তিন মাস পর থেকে ৫০টি সমান সাপ্তাহিক কিস্তিতে আদায় করা হয়। ঋণ পরিশোধ সাপেক্ষে আবার ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া ঋণ প্রদানের সময় কোনো রকম জামানত নেওয়া হয় না।
যশোরের অজপাড়াগাঁয়ের শিশু খাদিজা আক্তারের (৬) সহায়তায় বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সহযোগিতায় অভিভূত ভরতভায়না গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ। তারা ভাবতেই পারেন নি, এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের মত দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এবং এর চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এগিয়ে আসবেন। চিকিৎসা শেষে খাদিজা গ্রামে ফেরার পর যশোরের কেশবপুর উপজেলার ভরতভায়না গ্রামের এবিজিকে ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গ্রামবাসীর আয়োজনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও দোয়া অনুষ্ঠানে গ্রামবাসী এভাবেই তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। ভরতভায়না গ্রামের আলাউদ্দিন মোড়লের মেয়ে খাদিজার ওপেনহার্ট সার্জারির যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে বসুন্ধরা গ্রুপ।
এছাড়া বন্যা, সাইক্লোন, টর্ণেডো, ঘূর্ণিঝড়, রানা প্লাজা ট্রাজেডীসহ যে কোন দুর্যোগে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ।    ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে কর্মরত সাংবাদিক কর্মচারীদের চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহন করে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনা ও দুর্যোগ কবলিত হলে পরিবারকে নগদ অর্থসহ চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার গ্রহণ করে সমাজসেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আহমেদ আকবর সোবহান।এছাড়া ৮৮ বন্যা থেকে শুরু করে সর্বশেষ সাভার রানা প্লাজা ট্রাজেডী। কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারের মেয়েকে সৎপাত্রের হাতে তুলে দেয়া, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজ সহ নানা প্রতিষ্ঠানে অকাতরে দান করে বসুন্ধরা গ্রুপ। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার খরচ এবং বৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। শুধু তাই নয় মানিকগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় ফ্রি ফাইডে ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে। খাবার পানি সংকট নিরসনে দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে গভীর ও অগভীর নলকূপ বসিয়েছেন। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি বা সংস্কারে তিনি দু’হাতে দান করেছেন। এছাড়া তার নিজ গ্রাম দূর্গাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬০০ ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মানিকগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে তার অনুদানে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী দ্বীনি শিক্ষা লাভ করছে।মানবতাবাদী ও সমাজসেবক আহমেদ আকবর সোবহান সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মা ও শিশুদের আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার জন্য বসুন্ধরা-আদ্ দ্বীন হাসাপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে নামমাত্র খরচে আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। গরীবদের দেয়া হয় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা।
অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী আহমেদ আকবর সোবহান উদার মনোভাবের পাশাপাশি সহজ-সরল জীবনযাপন এবং সদাহাস্যমুখ, সুন্দর আচার-ব্যবহারের কারণে মানুষকে খুব সহজেই আপন করতে পারেন। তিনি সব সময় বলেন, আমি একা-ই ভালো থাকব, তা কখনো কাম্য নয়। বরং দেশের মানুষ সবাই ভালো থাকুক, ভাল থাকার অবলম্বন খুঁজে পাক, এটাই আমার কাম্য। একটি পরিবার যখন কর্তাকে হারায় তখন তাদের কিছু থাকে না। অসহায় হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বসুন্ধরা গ্রুপ যে সহযোগিতা করছে তা অব্যাহত থাকবে। বসুন্ধরা গ্রুপের লক্ষ্যই হচ্ছে, দেশ ও মানুষের কল্যাণে পাশে দাঁড়ানো ।
ইতিমধ্যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে বসুন্ধরা। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের জন্য এমন কিছু তিনি করতে চান যাতে বিপদাপন্ন কোন সাংবাদিককে টাকার জন্য অন্য কোথাও যেতে না হয়। এছাড়া বসুন্ধরা গ্রুপের ইস্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া থেকে যা আয় হবে তার সবটুকু সাংবাদিকদের পেছনেইে ব্যয় হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন এই মহানুভব ব্যক্তি। আত্মপ্রচারবিমুখ এই মানুষটির মতো সবাই যদি মানুষের পাশে এগিয়ে আসে তবে সমাজের বিপদগ্রস্ত অনেক মানুষ বাঁচার আশ্রয় পাবে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবনআহমেদ আকবর সোবহানের জন্ম ১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার ইসলামপুরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তার বাবা আলহাজ্ব আবদুস সোবহান ছিলেন ঢাকা উচ্চ আদালতের আইনজীবী এবং মা উম্মে কুলসুম ছিলেন গৃহিনী। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে আকবর সোবহান সবার ছোট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অধ্যয়ন বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে আহমেদ আকবর সোবহান ছিলেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একজন ক্রীড়াবিদ এবং সহপাঠীদের মধ্যে সবচেয়ে চৌকষ।
কর্মজীবন১৯৮৭ সালে আহমেদ আকবর সোবহান অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যবাসয়িক যাত্রা শুরু করেন। বসুন্ধরা গ্রুপের পথচলা শুরু ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। যা পরবর্তীকালে বসুন্ধরা হাউজিং হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। গুণগত মান এবং সর্বোচ্চ সেবার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে ভোক্তাদের আস্থার অন্য নাম। এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম ছিলো না কখনোই। বহু চরাই-উৎরাই, বাঁধা পার হতে হয়েছে। কিন্তু আহমেদ আকবর সোবহান কখনো নিজ নীতি থেকে বিচ্যুত হননি। অটল থেকেছেন নিজের লক্ষ্যে। সততা, নিষ্ঠা, ধৈর্য্য এবং নিরলস প্রচেষ্টায় নিজ হাতে তিনি বসুন্ধরা গ্রুপকে নিয়ে এসেছেন আজকের এই বিশাল ব্যাপ্তি এবং বিরাট অবস্থানে। ইস্পাত ও প্রকৌশল, কাগজ, টিস্যু, সিমেন্ট, এলপি গ্যাস, স্যানিটারি ন্যাপকিন, কাগজজাত পণ্য, ড্রেজিং, জাহাজ শিল্প, খাদ্য ও পানীয়, লোহার নল উৎপাদনসহ অন্তত তিন ডজনেরও বেশি নানা মাত্রার বৃহৎ শিল্পখাতে নিজেদের ব্যবসায়ের ব্যাপ্তি বিস্তার করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। আহমেদ আকবর সোবহানের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা এবং বিচক্ষণ তদারকিতে বসুন্ধরা গ্রুপ অবকাঠমোগতভাবে অর্জন করেছে যথেষ্ট দক্ষতা এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের যোগ্যতা লাভ করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের শিল্পোদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নানা পণ্যে আমদানিনির্ভরতা কমেছে। বসুন্ধরা গ্রুপ কেবল ব্যবসায়িক খাতই নয়, তৈরি করেছে বিরাট কর্মক্ষেত্রও। এই গ্রুপের নানা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কর্মরত আছেন প্রায় ৫০ হাজার কর্মী। এছাড়াও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে  বসুন্ধরা গ্রুপে কাজ করছেন প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ। রাজস্বখাতে বিরাট অবদানের মাধ্যমে দেশীয় আর্থসামাজিক উন্নয়নেও অবদান রাখছে বসুন্ধরা। বহু বছর ধরেই দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজস্ব দাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম ধরে রেখেছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
সামাজিক কর্মকান্ড কেবল ব্যবসায়িক অঙ্গনেই নয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনেও দৃষ্টান্ত রেখেছেন আহমেদ আকবর সোবহান। সাফল্যের শীর্ষে অবস্থান করেও ভুলে যাননি দেশীয় সংস্কৃতি ও মানবতার কল্যাণে ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ। দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের কথাও মনে রেখেছেন সবসময়। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন নিত্যদিন। বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত দুটি মানবল্যাণ ফাউন্ডেশন ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের জীবন চলার পথ সুগম করতে নীরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্ত। এছাড়াও নানা সময়ে বিপদগ্রস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বহু নজির রেখেছেন আহমেদ আকবর সোবহান।
সাম্মানিক দূত২০০৬ সালের জুলাই থেকে আহমেদ আকবর সোবহান ইউক্রেন প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের সাম্মানিক দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্পৃক্ততাসভাপতি, বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএলডিএ), সভাপতি, বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ) সভাপতি, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ), চেয়ারম্যান, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ও সদস্য, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, (এফবিসিসিআই), জেনারেল বডিসদস্য, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), জেনারেল বডি ও সদস্য, বাংলাদেশ সিমেন্ট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিটিএ), সদস্য, রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন (রিহ্যাব), সদস্য, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।পুরস্কার ও সম্মাননা- সামাজিক খাতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৯২ কাজী নজরুল ইসলাম পদক বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ, ১৯৯৩ মাওলানা ভাসানী জাতীয় পদক মাওলানা ভাসানী জাতীয় স্মৃতি পরিষদ, জাতীয় আবাসন খাতে বিশেষ অবদানের জন্য। প্রেসিডে›ন্ট গোল্ড মেডেল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ১৯৯৪ রিয়েল স্টেট খাতে বিশেষ অবদানের জন্য। ২০০১ অর্থকণ্ঠ বাণিজ্য পদক দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতি বিষয়ক সাপ্তাহিক অর্থকণ্ঠ, বাণিজ্য খাতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০২ জনতা ব্যাংক প্রাইম কাস্টমার অ্যাওয়ার্ড জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ২০০২ ইউএসএ সামিট ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ২০০৭ বিজনেস লিডারশীপ অ্যাওয়ার্ড, ২০০৯ বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সংগঠন পদক বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সংগঠন ২০১০ অগ্রণী ব্যাংক বেস্ট ক্লায়েন্ট অ্যাওয়ার্ড অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। ২০১১ বিবেকানন্দ অ্যাওয়ার্ড ভারত। তিনি বাংলাদেশের রিয়েল এষ্টেট খাতকে শিল্পে রূপান্তর করার নিপুণ কারিগর।