লালমনিরহাট মোটর শ্রমিকের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে রণক্ষেত্র

 মঙ্গলবার ২ জুন রাত ৮টায় লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের দখল নিয়ে দুই দল শ্রমিকের মধ্যে ঘন্টা ব্যাপী কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় মুহুর্তে বাসস্ট্যান্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে যায়। বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

জানা গেছে, ৬৭দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল সেমাবার হতে আন্তঃ জেলা ও দুরপাল্পার নৈশকোচ চালু হয়েছে। সরকারের দেয়া স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত ও আইন শৃংখলা বাহিনী স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের নামে সকল প্রকার চাঁদা আদায় বন্ধ করে দিয়েছে।

এই শ্রমিক সংগঠনের চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিকরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেছে। বর্তমান শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা প্রতিটি বাস ও ট্রাক হতে তথাকথিত শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে চাঁদা তুলতে চেষ্টা চালায়। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকরা কোন কল্যাণ ফান্ডের নামে চাঁদা দিবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। রাত ৮টার পর বাসস্ট্যান্ড দিয়ে সকল দূর পাল্লার শতাধিক নৈশ্যকোচগুলো রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ছেড়ে যায়। এই সময় শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নিয়ে গাড়ি প্রতি চাঁদা তুলতে চেষ্টা করে। এ খবর সাধারণ শ্রমিকদের কাছে পৌচ্ছেলে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে বাসস্ট্যান্ড দখলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ  নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়ে যায়। প্রায় ঘন্টা ব্যাপী এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। মুহুর্তে বাসস্ট্যান্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে যায়। লালমনিরহাট পুলিশ লাইনস্ সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় খুবদ্রুত সেখানে পুলিশ পৌচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখন বাসস্ট্যান্ডের দখল পুলিশের কাছে রয়েছে। পুলিশ পাহারায় ঢাকাসহ সকল নৈশ্যকোচ চলছে।

সাধারণ শ্রমিক আন্দোলন কমিটির নেতা নুরনবী বকুল সাংবাদিকদের জানান, ১১বছর ধরে বর্তমান কমিটি শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের কথা বলে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। তারা করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রমিকের কোন খোঁজ নেয়নি। সরকার কোন চেইন চাঁদা উত্তোলণে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাদের গুন্ডাবাহিনী দিয়ে চেইনের নামে প্রতিটি গাড়ি হতে ২শত ৭০টাকা করে জোরপূর্বক উত্তোলন করার চেষ্টা চালায়। তা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা সাধারণ শ্রমিক আমরা কোন রাজনীতি বুঝিনা। মালিক সমিতি ইউনিয়ন বুঝিনা। যারা আমাদের দুর্দিনে পাশে ছিল না। তাদের দিয়ে কি হবে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলবো।

শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহম্মেদ সাংবাদিকদের জানান, মটর মালিক সমিতির মদতে তথাকথিত শ্রমিক নামধারী গুন্ডারা বাসস্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আমরা শ্রমিকরা করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে মটর মালিক সমিতির কোন আর্থিক সহয়তা পাই নাই। তাই মালিক সমিতি বাস হতে জিপির নামে চাঁদা উত্তোলন করে তা বন্ধ করার দাবি তুলেছি। সেই কারনে বাসস্ট্যান্ড মালিক সমিতির গুন্ডারা দখলে নিতে চায়।

এদিকে মটর মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিক আন্দোলনের সাথে মটর মালিকের কোন সর্ম্পক নেই। জিপির অর্থ মালিকদের মটর মালিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আপদকালীন এই অর্থ তুলে। এটা বন্ধ করার অধিকার মটর মালিকের শ্রমিকদের নেই। মটর মালিক সমিতির সদস্যরা যদি মনে করে জিপি দেবেনা। মালিক সমিতি নিবেনা।