নাটোর প্রতিনিধি
৭০লাখ টাকার টেন্ডার না পাওয়ার কারণে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলামকে মারপিট করেছেন এইচটি ড্রাগের কর্ণধার ঠিকাদারে এমদাদুল হক হীরা।
সোমবার দুপুরে নাটোর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের হাসপাতালের কর্মচারীকে এই মারপিটের ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঔষধ সরবরাহের জন্য ৭০লাখ টাকার একটি টেন্ডার আহবান করা হয়। এই টেন্ডারে ঠিকাদার ইমদাদুল হক হীরা সহ মোট ৬জন ঠিকাদার অংশ গ্রহন করেন।
কিন্তু টেন্ডারে ঔষধ সরবরাহের কাজটি পায় পাবনার মের্সাস আহনাফ এন্টার প্রাইজ এবং আর জেড এস এন্টার প্রাইজ। এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ঠিকাদার হীরা।
পরে সোমবার দুপুরে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে হাসপাতালের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলাম দাপ্তরিক কাজে আসলে সেখানেই তাকে মারপিট করে ঠিকাদার হীরা। এসময় শহিদুল ইসলামের মোবাইল ফোন এবং চাবী কেড়ে নেয় ঠিকাদার হীরা। পরে সিভিল সার্জনের মধ্যস্ততায় মোবাইল ফোন এবং চাবী ফিরিয়ে দেয় ঠিকাদার।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান সহকারী শহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোমবার দুপুরে অফিসিয়াল কাজে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যাই। সেখানেই হাসপাতালের টেন্ডারের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ঠিকাদার হীরা আমাকে চর থাপ্পর মারে। পরে অফিসের অন্যরা এসে উদ্ধার করে। আমি বিষয়টি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্তে পরবর্তী আইনী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এবিষয়ে ঠিকাদার ইমদাদুল হক হীরার সেল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিভিল সার্জন অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ঠিকাদার হীরা সরকারী কর্মকর্তাদের মতো সারাক্ষণ অফিসে এসে বসে থাকে। পুরো সিভিল সার্জন অফিসকে সে জিম্মি করে রেখেছে। কেউ কিছু বললে, সরকারী কর্মকর্তাদের গালিগালাজ এবং মারপিট করতে যায়। হীরার জিম্মি থেকে সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা মুক্তি চায়।
সূত্র জানায়, জেলা সিভিল সার্জনের অধিনে নাটোর সদর হাসপাতাল সহ ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে এক চেটিয়া ভাবে ওষধ সরবরাহ করে আসছিল ঠিকাদার এমদাদুল হক হীরা। সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের অধীনে ওষধ ক্রয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা পর্যায় থেকেই টেন্ডার আহবান করা হচ্ছে।
নাটোরজেলা সিভিল সার্জন ডা. কাজী মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তবে সিভিল সার্জন অফিসকে জিম্মির বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, আগের সিভিল সার্জন থাকা কালীন কিছু সমস্যা ছিল। বর্তমানে ঠিকাদার হীরা সিএস অফিসে কম আসেন।