গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুরে গোলাগুলি, হামলা, ভাংচুরের অভিযোগে উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের ২৫ জনের নামসহ অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হওয়ায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে ওই মামলা মিথ্যা এবং
প্রত্যাহারের দাবি করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান,
মেম্বারসহ এলাকাবাসী।
শনিবার সকাল ১০টায় ইউনিয়নের সিধুলী বাজারে অনুষ্ঠিত ওই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মতিন, ইউপি সদস্য এমএ মুনসুর, আব্দুল আলীম প্রমূখ। বক্তারা বলেন, ২৬ মে ঈদের পরদিন ঝাউপাড়া
বিন্যাবাড়ি বাজারে চেয়ারম্যান মতিনকে ডেকে ত্রাণ সামগ্রী নয়ছয়ের অবৈধ প্রস্তাব দেয় বজলু ও সায়েদ মেম্বার। চেয়ারম্যান তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে কথা
কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার ওপর হামলা চালায় ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি বজলু সরদার, তার পিতা ইসমাইল সরদার ও ইউপি মেম্বার সায়েদ আলী। এসময় চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকদের জনসম্মুখে লাঞ্চিত করা হয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বজলু নিজের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে চেয়ারম্যানের আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি বজলু সরদার বলেন, ত্রাণ
বিতরণকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে তাদের ওপরই মতিন চেয়ারম্যানের লোকেরা হামলা চালিয়েছে। এছাড়া প্রকাশ্যে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে বাড়িঘর ভাংচুরসহ নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় আমার পিতা ইসমাইল সরদার থানায় মামলা দায়ের করলে গ্রেফতার এড়াতে
চেয়ারম্যান ও তার লোকজন মানববন্ধন করেছে। ত্রাণের বিষয়ে চেয়ারম্যানকে কোনো অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হয়নি।
মনববন্ধনে বক্তারা আরো বলেন, চেয়ারম্যান আব্দুল মতিনের গাড়ি চালক মতিন মিয়া
সাড়ে ৫ লাখ টাকা পেত বজলু গ্রুপের সায়েদ মেম্বারের কাছে। পরে তাকে একটি
ভুয়া চেক দেয় যা ব্যাংকে ডিজঅনার হয়। এ নিয়ে সোনালী ব্যাংক গুরুদাসপুর শাখায় সায়েদ মেম্বারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগও আছে। এতে তাদের মধ্যে রেষারেষি চলছিল। সায়েদের অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগিতা না করায় বজলু গ্রুপের সাথে হাত মিলিয়ে চেয়ারম্যান মতিনের ওপর ওইদিন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়।
যোগাযোগ করলে সায়েদ মেম্বার বলেন, ত্রাণ বিতরণ নিয়ে চেয়ারম্যান মতিন আমাকে মোবাইলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। তারপরেও আমি সত্যের পথেই
চলবো।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন জড়িত না থাকায় চেয়ারম্যান মতিনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে
মামলার প্রেক্ষিতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চলছে।
আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।