সরকারি চাল পাচারের সময় আটক হওয়া বগুড়ার গাবতলীর সোনারায় ইউনিয়নের সাবেকপাড়া খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ শফিকুলসহ তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় শনিবার দুদক বগুড়া কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ বাদী হয়ে এই মামলা করে।দুদকের মামলায় উল্লেখ করা হয়, শুক্রবার ২৯ মে সকাল ৯টায় উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুনুর রশিদ উক্ত খাদ্য গুদাম এলাকা থেকে মোবাইল ফোনে জানতে পারেন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকারি চাল অবৈধভাবে অজ্ঞাত ব্যক্তির নিকট বিক্রি করে চাল গুদাম থেকে পাচার করছে। এরপর তিনি সাড়ে ৯টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাবতলী থানার কর্মরত এসআই আব্দুল হাই এর নেতৃত্বে একদল পুলিশকে চাল বোঝায় একটি ট্রাক আটক করে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখতে পান। এরপর তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে চাল বোঝাই ট্রাক সম্পর্কে দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ শফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। সেখানে উপস্থিত নৈশ প্রহরী সাদেকুল ইসলাম জানায় দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিদেশে ট্রাক ভিতরে প্রবেশের জন্য তিনি গুদামের দরজা খুলে দিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত সংশ্লিষ্ট লোকজনকে জিজ্ঞাসাদে তিনি জানতে পারেন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ শফিকুল, নৈশ প্রহরী সাদেকুল ইসলাম এর সহায়তায় সরকারি চাল আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আমজাদ হোসেন নিকট বিক্রি করে সেই অনুযায়ী চালগুলো ট্রাকে বোঝাই করা হয়েছে। এরপর গাবতলী মডেল থানার এসআই আব্দুল হাই উক্ত তিন আসামীসহ চালবোঝাই ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর অপরাধটি দুর্নীতি কমিশনের তফশিলভুক্ত অপলাধ হওয়ায় থানা থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে অবহিত করে। এরপর দুদক বগুড়ার উপ-পরিচালক সঙ্গীয় ফোর্সসহ গাবতলী গিয়ে আটককৃত আসামী এবং জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা করে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর প্রাথমিক সত্যতা পান। এরপর উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ডায়েরি মূলে উল্লেখিত আসামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা অনুমোদ করেন। এরপর পরস্পর যোগসাজসে সরকারি ৩শ’ বস্তা চাল আত্মসাতের অভিযোগে সোনারায় সাবেকপাড়া এলএসডি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ শফিকুল, নৈশ প্রহারী সাদেকুল এবং আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার উপ-পরিচালক মো: মনিরুজ্জামান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আসামীদের বিরুদ্ধে সরকারী চাল আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের আইন অনুযায়ী ইতিমধ্যেই মামলা ঋজু হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে গরীবের ত্রাণ যারা লুটপাট করবে এবং কোনরকম দুর্নীতির সাথে যুক্ত হবে সে যেই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা মর্মেও জানান তিনি।