“আগের মতন ঝামেলা নাই এখন হাসপাতালে ভালোই সেবা পাওয়া যায় আর রাত-বেরাতে সমস্যা হইলে মোবাইলে কল দেই,বিপদের সময় এমন ভালো ভাবে সেবা পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি”-এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা ছাতিয়ানগড় গ্রামের ভৈরবী রায়। সারা দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে অনেক সরকারি ও বেসরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যখন ঠিকমত সেবা না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তখনও অনাগত শিশুদের সুন্দরভাবে পৃথিবীতে স্বাগত জানাতে এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে করোনা ঝুঁকিতেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ডাক্তার,নার্স-মিডওয়াইফ,ওয়ার্ড বয় ও কর্মচারী সবাই একই পরিবারের সদস্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই স্বাভাবিক সন্তান প্রসব,জরুরী বিভাগ,ফ্লু কর্ণার,সীমিত পরিসরে আউটডোর ও ইনডোরে ২৪ঘন্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়,গত তিন মাসে দেশে চলমান লকডাউনের মধ্যেও শনিবার (৩০মে) পর্যন্ত ২৭২ শিশুর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে।গত মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রসব পূর্ববর্তী এএনসি সেবা নিয়েছেন ২০৯২ জন ও প্রসব পরবর্তী পিএনসি সেবা নিয়েছেন ৫৬৪ জন এবং প্রতিদিন গড়ে আড়াই শতাধিক রোগী ফ্লু কর্নার,আউটডোর ও জরুরী বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন।
নার্স ও মিডওয়াইফরা জানানা, তাঁরা নিয়মিত মোবাইলে প্রসূতি মা ও নবজাতকের খোঁজখবর নেন এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ দেন।
যার ফলে বিগত বছরে স্বাস্থ্য সেবায় বিভাগের তৃতীয় ও জেলার প্রথম হয়েছিল খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, একজন স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব তার সবটুকু দিয়েই আমরা মানুষের জন্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি। দেশে করোনা পরিস্থিতিতে নিজের জীবনে ঝুঁকি থাকলেও দেশের এ দুঃসময়ে আমাদের আন্তরিক সেবার মাধ্যমে প্রসূতি মায়ের কোলে একটি সুস্থ ও ফুটফুটে শিশুকে তুলে দিতে পেরে নিজেকে একজন গর্বিত স্বাস্থ্যকর্মী মনে করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতি মায়েদের জন্য এমন সেবা প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু রেজা মোমাহমুদুল হক বলেন,আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।সকলের সহযোগিতায় হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসবের হার বাড়ছে। সেবার মান বৃদ্ধিতে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন। তিনি আরো জানান,নরমাল ডেলিভারি হওয়ার পর সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় জন্ম নেয়া শিশুর জন্য জামা,মশারি ও ওই শিশুর মাকে উপহার দেয়া হয়।