শ্রীমঙ্গলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত। দীর্ঘ ১ বছরেও ভুনবীর ইউনিয়নস্থিত শ্রীমঙ্গল-মির্জাপুর-শমসেরগঞ্জ সড়কের শাসনগ্রামে বানিয়াভাঙ্গা ব্রীজের নিচ দিয়ে বাইন্নার খালের পানি প্রবাহ বন্ধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন। বিগত ২০১৭ সালের ২৮ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পানির প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টিকারী সব ধরণের স্থাপনা অবিলম্বে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবং দেশের সব জেলা প্রশাসককে জরুরী ভিত্তিতে এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা পাঠানো হয়েছিল। সর্বশেষ- করোনা ভাইরাস মহামারির কারনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩১ দফা নির্দেশনা মোতাবেক কৃষকগণের সহায়তা প্রদানে প্রতি ইঞ্চি পতিত ও কুষিজ জমির সর্বেচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিভাগ এবং সংশি¬ষ্ট অন্যান্য দপ্তর সমুহকে নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করা হয়। সরেজমিন পরিদর্শনে জানা গেছে- ভূমির শ্রেণী বিশেষকরে ফসলী ভূমির শ্রেণী পরির্তন, পানি প্রবাহ বাঁধগ্রস্থ করা, পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বেআইনী সত্তেও জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে ব্রিটিশ আমলে স্থাপিত শ্রীমঙ্গল-মির্জাপুর-শমসেরগঞ্জ সড়কের শাসনগ্রামে বানিয়াভাঙ্গা ব্রীজ সংলগ্ন সাইলরকম ভূমিতে ব্রীজের নিচের পানি নিষ্কাশন পথ বরাবর মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মান ও পুকুর খনন করেন শফিক মিয়া ও নুর মিয়া নামে ২ ব্যক্তি । ডানপাশের যে জমি দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল, সেই জমিতে এখন বাড়ি নির্মান শুরু করেছেন লিটন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। ফলে, বাইন্নার খালের পানি হাইল হাওরে পতিত হবার গতিপথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে য়ায়। এতেকরে দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতার কারণে শ্রীমঙ্গল-মির্জাপুর-শমসেরগঞ্জ সড়কের পশ্চিম পাশের শাসন গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের বেশকিছু বসতবাড়ীসহ রাস্তাঘাট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে থাকবে। মারাতœক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন শুধুমাত্র শাসন গ্রামেরই প্রায় ২শ একর জমির মালিক ও কৃষকরা। জনসাধারণের চলাচলে সৃষ্টি হবে স্থায়ী সমস্যা। স্থানীয় লোকজন জানান- শাসনগ্রাম, শাসন দ্বিঘর, ইসলামপাড়া, কদমতলা ও আশপাশ এলাকার পানি এবং পাহাড়ী ঢলের পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্রিটিশ আমলে হাইল হাওরমুখী খাল তৈরী করা হয়। খালটি তৈরীর প্রয়োজনে রাস্তা কাটা হয় এবং রাস্তার কাটা স্থানে ব্রীজ নির্মান করা হয়। স্থানীয়ভাবে খালটি বাইন্নার খাল এবং ব্রীজটি বানিয়াভাঙ্গ ব্রীজ নামে পরিচিতি লাভ করে। সেইথেকে শাসনগ্রাম, শাসন দ্বিঘর, ইসলামপাড়া, কদমতলা ও আশপাশ এলাকার পানি এবং পাহাড়ী ঢলের পানি বাইন্নার খালের মাধ্যমে বানিয়াভাঙ্গা ব্রীজের নিচ দিয়ে সরাসরি হাইল হাওরে পতিত হয়ে আসছে। বাইন্নার খাল দিয়ে উপরের পানি রাস্তার একপাশ থেকে অপর পাশে চলে যায় এবং এই পানি দিয়ে কৃষকরা চাষাবাদও করেন। স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিগত ১০ জুন ২০১৯ সালে শাসন গ্রামের রমেন্দ্র কুমার ভট্রাচার্য্য গং ১২২ জন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সরেজমিন তদন্তপূর্বক দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক গৃহিত কার্যক্রম সম্পর্কে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে অবহিত করার জন্য ১২ জুন ২০১৯ সালের ০৫.৪৬.৫৮০০.০০৯.৭১.০০১.১৮.৬৩১নং স্মারকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়। শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন- আমি অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত রয়েছি। কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ নিয়ে একাধিক তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা হবে বলে মুঠোফোন এর সংয়োগটি কেটে দেন। সর্বশেষ এ বিষয়ে আজ ২৩ মে ১১টা ৪৬ মিঃ পর্যন্ত একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি আর মুঠোফোন রিসিভ করেননি। এ ব্যপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন- বর্তমান করোনাভাইরাসজনিত কারণে অনেকটাই কাজ আটকে গেছে। ঈদুল ফিতর এর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।