ঈশ্বরদীতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে কাঁচা-সেমিপাকা ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা, ফসল, বিদ্যুৎ, রাস্তা ও মৎস্য সম্পদের বিপুল য়তি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এখনও য়তির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করতে না পারলেও শুধুমাত্র কৃষিতেই ১৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। ফসলের মধ্যে লিচুর রাজধানী বলে খ্যাত ঈশ্বরদীতে লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার সারাদিন বৃষ্টিপাতের ছিলো হালকা ঝড়ো হাওয়া। রাত সাড়ে ১০ টার পর বাতাসের গতি বাড়তে থাকে। গভীররাত তিনটা অবধি ঝড়ো হাওয়া সমানতালে প্রবাহিত হয়। ঝড়ে অনেক এরাকায় বিদ্যুতের পোষ্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব রায়হান জানান, কৃষি, মৎস্য এবং ত্রাণ ও দূর্যোগ বিভাগ কাজ করছে। এখনও ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, ঝড়ে ঈশ্বরদী উপজেলার ৬,৮৭০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিরূপণ করা হয়েছে। সবচেয়ে লিচুর বেশী ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ১,০৫০ হেক্টর জমির লিচু, ২৬০ হেক্টরের আম, ১,৭৩০ হেক্টর কলা, পেঁপে ৩২ হেক্টর, বিভিন্ন সবজি ২,১০৫ হেক্টর, তিল ৩২০ হেক্টর, মুগ ৪০৫ হেক্টর, বোরো ধান ৩২৫ হেক্টর, আউশ ১৬১ হেক্টর, মাসকালাই ২৭২ হেক্টর ও অন্যান্য ৭৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা সম্ভব না হলেও ১৫০ কোটি টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ঘর-বাড়ি ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। চেয়ারম্যানদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং মোবাইল সংযোগ কাজ না করায় সঠিক হিসেব নিরূপণ করা একনও সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
ঈশ্বরদীর কযেকটি ইউনিযনের সাধারণ মানুষ ও মেম্বারদের সাথে কথা বলে দুই শতাধিক সেমিপাকা ও কাঁচা ঘর-বাড়ি বিদ্ধস্থ হযেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই শতাধিক কোটি টাকা। তবে লিচুর কারণে ক্ষতি আরো বেশী হওয়ার সম্ভাবনা রযেছে।