রাজশাহীর বাগমারা একই উপজেলার দুই পৌরসভা তাহেরপুর ও ভবানীগঞ্জ। সম্প্রতি করোনা সংকটে প্রশাসনের লকডাউন বিধি ভবানীগঞ্জে বলবত থাকলেও তাহেরপুরে ঘটছে তার উল্টোটি। সেখানে ওষধসহ নিত্যপন্যের দোকান ছাড়াও কাপড় ও গার্মেন্টস সামগ্রী, মোবাইল ফোন, ক্রোকারিজ(হাড়িপাতিল), প্লাস্টিক সমাগ্রী ,জুতা সেনডল ও কসমেটিক্্র সামগ্রী সহ প্রায় প্রতিটি পন্যের দোকান হরদম খোলা রয়েছে। একই
উপজেলার দুই পৌরএলাকায় দুই নিয়ন বলবত হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভবানীগঞ্জের কাপড় ব্যবসায়ী সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। ভবানীগঞ্জের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, গত দেড় মাস ধরে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারন করায় গত প্রায় এক মাস পূর্বে বাগমারা উপজেলা প্রশাসন উপজেলার বড় বড় হাট বাজারে মাইকিং করে ওষধ সহ নিত্যপন্য ছাড়া অন্যান্য সকল দোকানপাট বন্ধ করার নির্দেশ জারী করে সেই সাথে বিশেষ
গুরুত্বপূর্ন প্রয়োজন ছাড়া জনসাধারনকে বাড়ির বাইরে বের না হতেও নির্দেশ জারি
করা হয়। এই নির্দেশ জারির পর প্রশাসন বাপক মনিটরিং শুরু করে। এ সময় অন্যান্য দোকানপাট বিশেষ করে কাপড়ের দোকানপাট খোলা রাখায় তাদেরকে ব্যাপক জরিমানা আদায় করে প্রশাসন। ভবানীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা উপজেলা প্রশাসনের কেন্দ্রে থাকায় তাদের প্রতি আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।
এখানে প্রশাসন উঠতে বসতে সামান্য ভুলত্রুটিতে তাদের কাছে হাজার হাজার টাকা
জরিমানা আদায় করেছে। অথচ একই উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভায় আইন প্রয়োগ না হওয়ায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা এখনও তাদের দোকানপাট খোলা রেখে দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবানীগঞ্জ বাজারের লাকী টেইলার্স এ্যান্ড ক্লথ ষ্টোরের মালিক জুলফিকার আলী ভুট্রু জানান, গত দুই দিন আগে তিনি তার দোকান সামান্য খুলে পারিস্কার
পরিচ্ছন্ন করছিলেন। এ জেলা থেকে আগত ভ্রাম্যমান আদালত তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। একই বাজারের বিউটি ক্লথ ষ্টোরের মালিক ইউসুফ আলী বাদল জানান, তিনি গুরুতর তিনটি অসুখে ভুগছেন। দিনে তার ৩শ টাকার ওষধ লাগে। দোকানই তার এক মাত্র ভরসা। তাই বাধ্য হয়ে দোকান খুলেছিলেন। পরে এসিল্যান্ড এসে তাকে ১
হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এভাবে প্রশাসনের জরিমানা চলতে থাকায় ভবানীগঞ্জ
বাজারে ওষধ ও নিত্যপন্য ছাড়া সকল দোকান একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। অথচ এই সময়ে
তাহেরপুরে ওষধ ও নিত্যপন্য ছাড়া অন্যান্য সকল দোকানপাট হ্রদম খোলা রয়েছে বলে জানান ভবানীগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ তাহেরপুরের মেয়র ব্যবসায়ীদের সেল্টার ও প্রেকেটশন দেন বলে তারা ইউএনও’কে ভয় পায় না। তাই তারা দোকান খোলা রাখার সাহস পান। এদিকে গতকাল রবিরার সরেজমিনে তাহেরপুরে গিয়ে কাপড় ও মোবাইলের দোকানপাট সহ বিভিন্ন দোকানপাট খোলা দেখতে পাওয়া গেছে। কাপড় পট্রির রেজওয়ান বস্ত্রালয়ের মালিক ফেরদৌস ও ফ্যাসন হাউজের মালিক আব্দুল্লাহেল কাফি জানান, তারা অল্প পরিমান দোকান খোলা রেখেছেন। তবে বেচাবিক্রি খুবই কম। লোজনের মাঝে আতংক কাটেনি তারা দোকানে আসছে না। একই অভিমত জানান, ডেস পয়েন্টে গার্মেন্টস এর মালিক মহসিন আলী। তিনি বলেন, দোকান বন্ধ রাখলেও ঘর ভাড়া, বিদ্যুত বিল ও কর্মচারীর বেতন দিতে হচ্ছে । তাই বাধ্য হয়ে দোকান খুলেছি। তবে এসব
ব্যবসায়ীরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একজন একজন করে কাস্টমারকে পন্য দিচ্ছেন বলে দাবী করেছেন। এ ছাড়া একই সময়ে এই বাজারের পেয়াজ হাটাতে কয়েকটি মোবাইল ফোন ও ক্রোকারিজ(হাড়িপাতিল) এর দোকানপাট সহ অন্যান্য দোকানপাট সমুহ খোলা দেখতে পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ জানান, আমরা তাহেরপুরেও অভিযান চালিয়েছি এবং জরিমানা আদায় করেছি। এখানে ও রকম কোন বৈষম্য নেই । তাহেরপুরে নির্দেশনার বাইরে দোকানপাট খোলা থাকলে শিগ্রই সেখানে অভিযান চালানো হবে। তার মতে করোনা সংক্রামন রোধে ্আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এ জন্য তিনি শ্রেণিপেশা দল মত নির্বিশেষে সকলের আন্তরিক সহযোগিতাও কামনা করেছেন।