নাটোর প্রতিনিধি
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে সবাই কমবেশি সংকটে। অনেক এনজিও বা সমবায় সমিতি এ পরিস্থিতিতেও জোর করে কর্মকর্তা ও কর্মচারী দিয়ে কাজ করাচ্ছে। অনেকে ব্যয় কমাতে কর্মচারী ছাঁটাই করছে বা তাঁদের অর্ধেক বেতন দিচ্ছে। আবার
অনেকেই বেতন দিচ্ছেনা । এর মধ্যেও ব্যতিক্রমী উদাহরণ সৃষ্টি করেছে নাটোরের সম্প্রীতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জামান টুটুল । ইতিপূর্বে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আগাম সতর্কতার অংশ হিসেবে ” সম্প্রীতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমবায় সমিতি” ২০ জন স্টাফকে মার্চ মাসের বেতন দিয়ে ছুটি দিয়েছিলেন সংস্থাটি । আপদকালীন সময়ে যারা বাসায় অবস্থান করবে তাদের পুরস্কার হিসেবে প্রতিদিন জন্য সম্মানী ভাতা প্রদানের ঘোষণা দেন । একই সাথে ১৮ মার্চ থেকে সমিতির চার শতাধিক সদস্যের কিস্তি বন্ধ ঘোষণা দেন এবং যতদিন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে সদস্যদের কিস্তি দিতে হবেনা। বরং আপদকালীন সময়ে সমিতির সদস্যদের সকল প্রকার সহযোগিতা করবে প্রতিষ্ঠানটি। ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সংস্থাটি ১ হাজার কর্মহীন মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন ।করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে গত ২৪ মার্চ থেকে সংস্থাটি ছুটি। কিন্তু শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা অগ্রিম প্রদান করেন ।
আজ রোববার দুপুরে সম্প্রীতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমবায় সমিতিতে কর্মরত ২০ জন কর্মকর্তাকে দেওয়া হয় এপ্রিল মাসের পুরো বেতন সহ ঈদ বোনাস এবং চাকরি না হারানোর নিশ্চয়তা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আসাদুজ্জান টুটুল ।অগ্রিম বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার বিষয়ে বলেন, আমি সংস্থাটি শুরু করার সময় মাত্র ১০ জন সদস্য । এখন সমিতির সদস্য সংখ্যা ৪০০ । সব কিছুর পিছনে আমাদের এই কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবদান ।এই দুঃসময়ে কীভাবে তাঁদের অবদান অস্বীকার করব? তাদের হাতে টাকা নেই। মার্চের বেতন খরচ হয়ে গেছে। অফিস বন্ধ থাকায় এখন তাঁদের সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর। এপ্রিলের বেতনটা হাতে থাকলে সংকটে পড়বেন না ’তিনি বলেন, মালিক নয়,একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে তাদের এই দুর্ভোগ আমাকে ব্যথিত করেছে। তাই বেসরকারী একটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তাদের বেতন ভাতা এবং ঈদ বোনাস দিয়েছি ।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মী তৃষা সাহা বলেন.করোনা সংকট চলাকালে নাটোরে প্রথম কোন ক্ষুদ্র সমবায় সমিতি সদস্যদের কিস্তি বন্ধ করে এবং ষ্টার্ফদের আগাম একমাসের বেতন সহ পর্যাপ্ত মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছিল ।আজ দিলেন এপ্রিল মাসের পুরো বেতন-ভাতা এবং ঈদ বোনাস । এছাড়া সমিতির সদস্যদের নিয়মিত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ।
নাটোরের প্রবীন রাজনীতিবিদ মনজুর মোর্শেদ লুলু বলেন,দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সবারই এমন উদ্যোগ নেয়া জরুরি প্রয়োজন ।
সম্প্রীতি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমবায় সমিতি নির্বাহী পরিচালক টুটুল বলেন, প্রচারের জন্য নয় মূলত সমাজের একজন সচেতন মানুষ হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা আর মনোযন্ত্রণার আপন তাগিদে করেছি । যা অব্যাহত থাকবে । দেশের ক্রান্তি লগ্নে সবাই কে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে ।