মে দিবসের ছুটির মধ্যে নিজের তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজ করা ও বিক্ষোভের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন অভিনেতা অনন্ত জলিল। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে এ নিয়ে বক্তব্য দেন। সেটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আসসালামু আলাইকুম, আপনারা সবাই আমার সম্পর্কে জানেন যে আমি নিঃস্বার্থভাবে বিভিন্ন জায়গায় সাহায্য সহযোগিতা করি। বর্তমানে সব জায়গায় এই করোনার মহামারীতে পিপিই এবং মাস্ক এর দুষ্প্রাপ্যতা। বিশেষ করে যারা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত তাদের এখন অত্যন্ত জরুরি পিপিই এবং মাস্ক। তাই কস্টিং প্রাইজের কমে আমার ফ্যাক্টরি থেকে আমি পিপিই এবং মাস্ক তৈরির অর্ডার নেই। গতকালকেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ছিল যে আজকে পহেলা মে শ্রমিক দিবস।’
‘ছুটির দিনে যারা ৪ ঘণ্টা ডিউটি করবে তারা ৮ ঘণ্টার বেতন পাবে। কারণ এই সময় মাস্ক ও পিপিই বানানো অত্যন্ত জরুরি। মানবতার এই কাজে এগিয়ে আসতে চায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন কর্মচারী। শুধুমাত্র তারাই আজকে সকাল থেকে ডিউটি শুরু করে। ১১টার সময় কিছু বহিরাগত মানুষ সাংবাদিক নিয়ে এসে বিশৃঙ্খলা শুরু করার চেষ্টা করে। তাই আমরা তিন ঘণ্টা পরেই ছুটি ঘোষণা করি।’
‘আজকে মহান মে দিবস শ্রমিক দিবস। বিগত ২২-২৩ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি শ্রমিকদের কে নিয়ে কাজ করছি। এই ২২-২৩ বছরের অভিজ্ঞতায় অবশ্যই ন্যূনতম জ্ঞান তো আমার আছে যে শ্রমিক দিবসে অবশ্যই ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখা হয়।’
‘যে কয়জন আজকে এই পিপিই ও মাস্ক বানাতে এসেছিল তারা সবাই নিজ ইচ্ছাই এসেছিল এবং তাদেরকে ৪ ঘণ্টা ডিউটিতে ৮ ঘণ্টার পারিশ্রমিক দেওয়ার শর্তে আনা হয়েছিল। তাদেরকে আমার ফ্যাক্টরিতে গাড়ি দিয়ে আনানো হয়েছিল এবং গাড়িতে করেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং এটা সত্য যে আজকে ফ্যাক্টরি খোলা হয়েছিল এবং যারা আজকে কাজে এসেছিল তারা এসেছিল মাস্ক ও পিপিই বানানোর জন্যই।’
‘কিন্তু এই যে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ ভাঙচুর, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া তো কেউ করেনি। এ ধরনের বানোয়াট মিথ্যা নিউজ করবেন না। কোথাকার শ্রমিকের ছবি কোথায় দিয়ে ভুয়া নিউজ করে ফেলছেন। সাভার জোনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ইনচার্জ ও ট্যানারি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের সঙ্গে কথা বললেই ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। তারা এসে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে গেছেন।’
‘এজেআই গ্রুপ হেমায়েতপুরের সিংরাই রোডে অবস্থিত। নিউজে যে বিল্ডিং আর যে রাস্তা দেখা হচ্ছে এটি আমার ফ্যাক্টরির বিল্ডিং না ফ্যাক্টরির রাস্তাও না। আপনারা গুগল করে এজে আই গ্রুপের বিল্ডিং এর ছবি এবং রাস্তা দেখে নিন।’
‘আপনারা অবগত আছেন যে করোনার এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে ফ্যাক্টরিতে কাজে না আসা সত্ত্বেও আমি আমার কর্মচারীদের বেতন প্রদান করে দিয়েছি যথাসময়ে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক বড় বড় নামীদামী কোম্পানির যেখানে বেতন বন্ধ করে দিয়েছে।’
‘আর করোনার এই মহামারিতে আজকের ছুটিটা পেয়ে সবাইকে ঘরেই বসে থাকতে হত, যেহেতু সব জায়গায় লকডাউন। সেখানে চার ঘণ্টার কাজ করে ডাবল টাকা পাওয়ার ঘোষণা শুনে আনন্দের সহিত তারা আজকে ফ্যাক্টরিতে আসার সম্মতি জানায়।’
আর বিক্ষোভ করলে তো ফ্যাক্টরিতে ঢোকার করার আগেই করত, সেখানে ৩ ঘণ্টা ডিউটি শেষ হওয়ার পর বিক্ষোভের কথা নিউজে লিখা হয়েছে। বিক্ষোভ করলে তো গতকালকে বা আজকে ফ্যাক্টরিতে ঢোকার আগেই করত। সুতরাং আপনারা স্পষ্ট বুঝতেই পারছেন কিছু কুচক্রী মহল আমার নাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য আজকের ঘটনাটি সাজিয়েছেন।’