ঈশ্বরদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও হাট-বাজারে করোনা-সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষে-মানুষে ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখার নির্দেশনা অনেকেই মানছে না। ক্রেতা-বিক্রেতারা একে অন্যের গা-ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছেন। হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার রা হচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের চায়ের দোকানে আগের মতই মানুষের আড্ডা চোখে পড়েছে। প্রশাসনের নির্দেশনার তোয়াক্কা করছে না তারা। ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও সেনাবাহিনী দেখলেই সটকে পড়ছে। তারা চলে গেলে আবার ভীড় জমাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে ঈশ্বরদীতে যেন চোর-পুলিশ খেলা চলছে।
শহরের পৌর সুপার মার্কেটের কাঁচা বাজারে সবজি কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। অনেকেই মাস্ক ব্যবহারও করেন না। হাতে গøাভস নেই। দোকানি ও ক্রেতার মাঝখানেও তেমন দূরত্ব রা করা হয় না। ক্রেতা-বিক্রেতাদের যত্র-তত্র কফ-থুথু ফেলতে দেখা গেছে।
ঈশ্বরদীতে ওষুধের দোকান (সার্বক্ষনিক), মুদি দোকান (বিকেল ৪টা) ও সবজির দোকান (সকাল ১১টা) ব্যতিত সব ধরনের দোকানপাট বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। শহরসহ গ্রামাঞ্চলের অনেক বাজারে এই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। ঈশ্বরদী বাজারের কাপড়-গার্মেন্টস্ ব্যতিত অন্যান্য পণ্যের পাইকারী-খুচরা বিক্রেতা দোকানের ঝাঁপ বন্ধ রেখে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। খরিদ্দার পেলে টুক করে মালামাল বের করে দিচ্ছে। প্রতিদিনই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান পরিচালনা এবং জরিমানা করছেন। ম্যাজিষ্ট্রেট ঢুকলে দৌড়াদৌড়ি করে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। তাঁরা চলে যাওয়ার পর আবারো বিক্রি শুরু করেন।
ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, মানুষের মধ্যে কোনো সচেতনতা নেই। আগের মতই বাজারে ভীড় হচ্ছে। অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েও ভীড় রোধ করা যাচ্ছে না।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গোলাম মোস্তফা চান্না মন্ডল জানান, প্রতিদিন সকালে ঢাকা হতে রড, সিমেন্টের গাড়ির সাথে সাথে করোনাও আসছে। এসব গাড়ি ও মালামালের সাথে এবং লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিধায় এই গাড়ি ও মালামাল ঝুঁকিপূর্ণ।
নিয়ম না মানা ও সচেতনতার অভাব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসমা খান বলেন, মানুষে-মানুষে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। বাজারে ভীড়ের কারণে সামাজিক দূরত্ব লঙ্ঘিত হচ্ছে,এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে।
এই বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, সীমিত সংখ্যক পুলিশ দিয়ে এতোবড় এলাকা সামাল দেয়া যাচ্ছে না। সচেতনার জন্য বার বার মাইকিং করা হয়েছে। চায়ের দোকান বন্ধ করে দেয়া হযেছে।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব রায়হান জানান, সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার ল্েয বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ভ্রামমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বাঁচতে হলে নিজেদের সচেতন হতে হবে। সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।