নাটোরে এক কিশোরের কর্মকান্ডে নাকানি-চুবানি খেলো জেলা পুলিশ ও সাংবাদিক

নাটোরে এক কিশোরের কর্মকাণ্ডে নাকানি-চুবানি খেলো জেলা প্রশাসন পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ ও সাংবাদিক।সোমবার দুপুর থেকে জেলা প্রশাসন,পুলিশ, স্বাস্থ্য বিভাগ, সাংসদ, সাংবাদিকদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে একে অপরকে ফোন করে খবর নিতে থাকে কী হলো কী হলো! সর্বত্র করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যার দিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। এটি ছিল একটা গুজব।

পরে মঙ্গলবার বার বেলা এগারোটার দিকে পুলিশ সুপার এক প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করেন। কিন্তু তা বাতিল করে এক প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়। নাটোর পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত এক প্রেস বিফিংয়ে এই তথ্য জানা যায়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সোমবার দুপুরে ৩৩৩ কল করে আব্দুল করিম পরিচয় দিয়ে একজন জানান, তিনি করোনা আক্রান্ত। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি পালিয়ে নাটোরে এসেছেন। তার চিকিৎসা দরকার। বর্তমানে তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তার জরুরী চিকিৎসা দরকার। বিষয়টি জানাজানি হলে এখন পর্যন্ত করোনা মুক্ত থাকা নাটোরের জন্য বড় দুঃসংবাদ হিসেবে দেখা দেয়।

দ্রুত পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারের জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে কোন যোগাযোগ করে না। সংবাদ পেয়ে নাটোর সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল উদ্ধারকারী দল নিয়ে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে সে চারবার মিথ্যা ঠিকানা দিয়ে হয়রানি করে। কোথাও তাকে না পেয়ে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে তার প্রদত্ত ঠিকানাগুলো মিথ্যা বলে জানা যায়।

নাটোর জেলা পুলিশের অভিযানে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নাটোর সদর থানাধীন ল²ীপুর টলটলিয়াপাড়া হতে তাকে মোবাইল ফোনসহ আটক করা হয়। তিনি আব্দুল করিমও নন, আক্রান্ত রোগীও নন। তিনি সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া একজন ছাত্র। তার বয়স ১৪ বছর। লোকজনকে হয়রানি করা ও নিজে মজা নেয়ার জন্যে এমন মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছে বলে স্বীকার করে।

এ পর্যন্ত সে তার মোবাইল ফোন থেকে ৩৩৩ নম্বরে ৩১৬ বার ১৬২৬৩ নম্বরে ৬৩ বার ১০৬৫৫ নম্বরে ৪০ বার ১০৯ নম্বরে ৩১ বার এবং ৯৯৯এ ২৩ বার কল করে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান করেছেন। এ কাজের জন্য সরকারি স¤পদ ও সময় যেমন অপচয় হয়েছে তেমনি ভুক্তভোগী জনগণ প্রশাসন দায়িত্বরত অন্যান্য সংস্থা হয়রানির শিকার হয়েছে।
গুজব রটনাকারীর বয়স বিবেচনায় তার ছবি দেয়নি জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সকল অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলা হয় যাতে তারা তাদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের হাতে মোবাইল ফোন তুলে না দেন।