নাটোর প্রতিনিধি
গ্রাম্য শালিশ বসিয়ে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা আপোস করার অভিযোগ উঠেছে। শাস্তি হিসেবে ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে জুতারমালা পরিয়ে এলাকা প্রদক্ষিণ করা হয়েছে। সাথে এক লাখ টাকা আর্থিক জরিমানা ধার্য করেছে শালিস কারকরা। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত জরিমানার টাকা হাতে পায়নি শিশুর পরিবার।নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বেড়গঙ্গারামপুর বটতলা এলাকায় শুক্রবার দুপুরে ওই ঘটনাটি ঘটেছে। ধর্ষন চেষ্টার শিকার শিশুটির বয়স নয় বছর। বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশের দোকানে বাবার জন্য পান কিনতে গিয়ে ওই পরিস্থিতির শিকার হয় মেয়েটি।ধর্ষণ চেষ্টাকারীর নাম মো. রওশন আলী (৩৮)। সংসারে তার স্ত্রী ও সাত বছরের এক মেয়ে রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারনে সম্প্রতি তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। শুক্রবার সকাল থেকে তার বাবা আব্বাস প্রামানিকের মুদীর দোকানে বসে বেচা বিক্রি করছিলেন রওশন আলী। করোনার কারনে দোকানের একটি ঝাপ খুলে ক্রেতার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। একা পেয়ে জাপটে ধরে শিশুটিকে ধর্ষনের চেষ্টা চালানো হয়। এমন অভিযোগ শিশুটির বাবার।শিশুটির বাবা আরো জানান,- ঘটনার পর প্রতিবেশি আব্দুল মান্নানের কাছে বিচার দাবী করেছিলেন তিনি। পরে এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য (৭নম্বর ওয়ার্ড) আব্দুস সাত্তারে মধ্যস্থতায় তাঁর বাড়িতেই বসে সমঝোতা শালিশি বৈঠকে আব্দুর রাজ্জাক মো. হেকমত আলী , আক্কাস সরদার, মাহাবুর রহমানসহ কম পক্ষে ১০জন গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।শালিশি বৈঠকের সভাপতি আব্দুর সাত্তার সত্যতা নিশ্চিত করে সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানান, শিশুটির পরিবারের দাবীর প্রেক্ষিতে এলাকায় শান্তির কথা বিবেচনা করে শালিস বসানো হয়েছিল। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযুক্ত রওশন আলীকে জুতারমালা পরিয়ে এলাকা ঘুরানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।ধর্ষণ চেষ্টারমত ঘটনা গ্রাম্য শালিশে আপোস করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল সাত্তার বলেন,- শিশুটির পরিবার পুলিশের ঝামেলায় যেতে চায়নি বিধায় শালিশে সমঝোতা করা হয়েছে। শালিসে বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,- উভয় পরিবারই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে শান্তি স্থাপন করা হয়েছে। একারনে পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। তবে শিশুটির বাবা বলেন,- ধর্ষন চেষ্টাকারী ও তাদের স্বজনরা এলাকায় প্রভাবশালী। একারনে তাকে শালিশি বৈঠকে রাখা হয়নি তাকে। অভিযুক্ত রওশনকে জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ঘুরানো প্রত্যক্ষ করলেও জরিমানার টাকা হাতে পাইনি। ভয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে সাহস পাচ্ছেনা বলে জানান তিনি।গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) মো. মোজাহারুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, লিখিত অভিযোগ হাতে পাননি তিনি । তবে স্থানীয় সুত্রে বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শিশুটির বাবাকে থানায় এনে অভিযোগ নেওয়া হবে। একই সাথে ধর্ষণ চেষ্টাকারী ও শালিসে জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা চলছে।