মাঠ প্রশাসনে দায়িত্ব পালনের সময় সরকারি কর্মকর্তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলছেন, সরকারি চাকুরেদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) মাধ্যমে তাদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, এর ব্যত্যয় হলে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে। বেআইনি ও অকর্মকর্তাসুলভ আচরণের দায়ে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে শনিবারই প্রত্যাহার করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীনের ঘটনার পর আমরা জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আবারও তাদের বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা বলেছি, আপনাদের (ডিসি) অধীনে যারা কাজ করেন তারা যেন জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করেন। বাহাদুরি দেখানোর জন্য কোনো কাজ করলে, শৃঙ্খলাবিধি ভঙ্গ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে এই প্রবনতা কমবে
কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীনের ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই যশোরের মনিরামপুরে এসিল্যান্ড বয়জেষ্ঠ্য নাগরিকের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করলেন। এই ঘটনাগুলোর পর প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষন নিয়ে? জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ইত্তেফাককে বলেন, অবশ্যই প্রশিক্ষণ হয়। দেখেন যেখানে আইন শৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতির বিষয় থাকে সেখানে কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাই। কেন তাদের এই দায়িত্ব দেওয়া হয়? কারণ তাদের হাতে লাঠি থাকে না। সেনাবাহিনী নামলেও কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করেন। সেনা সদস্য বা পুলিশ সদস্যদের হাতে লাঠি থাকে, অস্ত্র থাকে। সেটার যেন কোন ধরনের অপপ্রয়োগ না নয় সে কারণেই অস্ত্র, লাঠি ছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিতে হয়। তারা মানবাধিকারের বিষয়টি অবশ্যই নজরে রেখে সিদ্ধান্ত দেবেন। তাই বলছি, মনিরামপুরের এসিল্যান্ড যে কাজ করেছেন, তার বড় শাস্তি হওয়া দরকার। আমি মনে করি, কুড়িগ্রামে যেটা হয়েছে সেখানে প্রশাসন শিথিলতা দেখিয়েছে। আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে সাসপেন্ড করা উচিৎ ছিল। ডিসি সুলতানা পারভীনকে শুধু প্রত্যাহার না, ওএসডি করতে হতো। আর এখন মনিরামপুরের ঘটনায় তো আমি নিজেই প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করেছি, এ কথা বলতে লজ্জা হচ্ছে। তাই বলছি, তাকে শুধু প্রত্যাহার করলে হবে না কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।