ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন নওগাঁর আত্রাইয়ের মোনাক্কা হোসেন মনু

জীবন-জীবিকার তাগিদে ফেরি করে মুখোরুচক ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন মোনাক্কা হোসেন মনু মিঞা। তিনি ৪০ বছর বয়সে এসেও ক্লান্তবোধ করেননি। তিনি দীর্ঘ ২২বছর ধরে ভ্যানগাড়িতে করে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে যাচ্ছেন। নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস চত্বর ও বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঅফিস সহ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকায় মনু ভাইয়ের এই ঝাল মুড়ি খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে নারী পুরুষ। তিনি নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার শিবপুর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে। দারিদ্র কোষাঘাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঝালমুড়ি বিক্রি করে আসছেন। দারিদ্র কোষাঘাত থেকে মুক্তি পেলেও জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও তাকে ঠেলা ভ্যারগাড়ি নিয়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। অবশ্য এই বয়সে তাকে আরাম-আয়েশে জীবন কাটানোর কথা থাকলেও এই মুখোরচক ঝালমুড়ি বিক্রি করছে সংসার চালানোর তাগিদে। প্রায় ১ হাজার টাকার চালান খাটিয়ে এই ঝাল মুড়ি বিক্রি করেই তিনি ২ ছেলে ২ মেয়েকে পড়াশুনা করাতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন। অর্থের অভাবে বড় ছেলেকে পড়াশুনা থেকে বিরত রাখেন ছোট ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ে। বাকি সন্তানেরা মায়ের সাথে বাড়িতে থাকেন। স্ত্রী ও ৪ সন্তান নিয়ে চলছে ঝাল মুড়ি মনু মিঞার সংসার। ঝাল মুড়ি বিক্রি করার জন্য উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে তাকে মিষ্ঠিআওয়াজে মনু ভাইয়ের ঝালমুড়ি,ঝালমুড়ি বলে বিক্রি করছেন।
তার আশা ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে মানুষের মত মানুষ করবে। ভালো চাকরী করবে এবং দেশ ও জাতির বাগ্য উন্নয়ন করবে। সেই আশা বুকে ধারণ করে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছুটছেন ভ্যানগাড়িতে ঝালমুড়ির নিয়ে উপজেলার এই শহরে। ক্লান্ত কন্ঠে মনু মিঞা বলেন, ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে ঠেলা ভ্যান গাড়িতে ঝাল-মুড়ির ঝুড়ি নিয়ে উপজেলার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটতে ছুটতে এখরন দুই পা অবস আসে। ছেলে -মেয়েকে নিয়ে মানুষের অনেক আশা থাকলেও এই বয়সে আর পারছি না।
কান্না জড়িত কন্ঠে মনু মিঞা আরো বলেন, এই উপজেলা শহরে অনেকের আনন্দ দেখে নীরবে ফেলি চোখের পানি।। বিশ^াস করো, তোমাদের কারো আনন্ দেখে, আমি কখনও হিংসা করি না। কোন অসৎ কাজ নয় ব্যবসা ছোট হলেও সততার সাথে থাকলে ভাল ভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়। এতে উপজেলা শহরের লোকজন আমাকে ভাল বাসে এবং আমার মুখোরুচক ঝাল মুড়ি ইচ্ছা করে নেয় বিশেষ করে ছাত্র/ছাত্রী সহ অনেকেই। ছেলে মেয়ে শিক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত আমি জীবন যুদ্ধে এই ঝাল মুড়ি ব্যবসা চালিয়ে যাব।