নওগাঁর আত্রাইয়ের ইরি-বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা

রওশন আরা শিলা,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ- শীতের হিমেল হাওয়া গায়ে মেখে আত্রাই উপজেলার কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছে ইরি-বোরো আবাদ নিয়ে। নির্বাচনী ডামাডোরের কারণে আমন আবাদ নিয়ে নায্যমূল্য বঞ্চনার কথা তেমন প্রকাশ হয়নি। এবারও মেলেনি কাঙ্খিত দাম। লাভের গুড় খেয়ে ফেলেছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। নায্যদাম না পাবার ব্যথা নিয়ে এখন মাঠে নেমেছে বোরো আবাদ নিয়ে। মাঠে মাঠে একই দুশ্য বোরো চারা রোপনের। সেচ দিয়ে জমি তৈরি করে বীজতলা থেকে চারা এনে রোপন করা হচ্ছে। যদিও ক’দিন আগে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে বীজতলা পড়ে কোল্ড ইনজুরীর মুখে। আমন কাটার পরে শুরু হয় বোরোর বীজ তলার প্রস্তুতি।
এ অঞ্চলের কৃষকরা এবার আদর্শ, বীজ তলার দিকে বেশি নজর দিয়েছে। যাতে করে ভালো মানের চারা তৈরি করা যায়। আর ভালো চারা মানেই ভালো ফলনের প্রত্যশা। আদর্শ বীজতলা নিয়ে কৃষক আর কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা জানান, গুনগত ও ভালো মানের ধানের চারা তৈরির জন্য এক মিটার প্রস্ত বেড করে এবং দুই বেডের মাঝে নালা রেখে মূলত আদর্শ বীজ তলা তৈরি করা হয়। সেচ দেয়া ও অতিরিক্ত পানি নিস্কাশনের সুবিধা, আন্ত পরিচর্যার সুবিধা সঠিক অনুপাতে বীজ তৈরীর জন্য এই বীজতলা। এখন থেকে ভালো মানের চারা তৈরী হচ্ছে। বীজ কম লাগছে। রোপনের সময় চারা সাশ্রয় হচ্ছে। এই বীজতলা তৈরীতে কম জমি লাগে। একশতক আয়তনের বীজ তলায় মাত্র ১২ শত বীজ লাগে।
অন্যদিকে সনাতনী পদ্ধতিতে বীজ লাগে প্রায় দ্বিগুণ। আদর্শ বীজতলার এক শতক বীজতলার চারা দিয়ে কুড়ি শতক ধানের জমি রোপন করা যায়। এ বীজতলার প্রত্যেকটি চারার সমান মানের হয়। চারায় কুশি গজায়। দুই একটি চারা দিয়ে একটি গোছা তৈরী করা হয়। সনাতনী পদ্ধতির বীজতলার চারা অপেক্ষাকৃত লিকলিকে চিকন হয় দূর্বল ও কম বাড়তি সম্পন্ন। ফলে ধানের ফলন কম হয়। এ অঞ্চলে (বরেন্দ্র) বীজতলা থেকে চারা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিকটবর্তী হাট-বাজারে।কেউ কেউ নিজেদের তৈরী বীজতলার চারা দিয়ে রোপন শুরু করেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আত্রাই সূত্রে জানায়, উপজেলায় ০৮টি ইউনিয়নে বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২০হাজার ৬শত ৭৮ হেক্টরের বেশী জমিতে। কৃষি বিভাগ বলছে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া বোরো আবাদের অনুকুলে রয়েছে। কৃষি বিভাগ ছাড়াও সেচ,বিদ্যুৎ,সার সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো আবাদ নিয়ে সজাগ রয়েছে। বোরো আবাদ পুরোটাই সেচ নির্ভর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম কাওছার হোসেন এমন কথা জানান, মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মীরা শুরু থেকে নজরদারী করছে। তারা বলছে আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে যাবে। এবার আত্রাই উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২১হাজার হেক্টরের কিছু বেশী জমিতে। গতবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০হাজার ৬শত ৭৮ হেক্টরের বেশী জমিতে। এবারও তেমনটি হবে।