গাভী পালন করে বেকারত্বকে হার মানিয়েছেন সিলেটের বিশ্বনাথের শিক্ষিত বেকার যুবক কবির আহমদ। বেকারত্ব আর সংসারের অভাব দূর করতে প্রথমে অল্প পরিসরে গাভী পালন শুরু করলেও অক্লান্ত পরিশ্রম আর সাহসের জোরে এখন তা খামারে রূপ নিয়েছে। গাভী পালনের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকে ঝুঁকেছেন গাভীর খামারের দিকে। তার খামারের নাম কবির গরুর খামার ও ডেইরী ফার্ম। উপজেলার বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের শাহজিরগাঁও গ্রামের ৩৮ বছরের শিক্ষিত বেকার যুবক ১৯৯৮ সালে বিশ্বনাথ আলিয়া মাদরাসা থেকে দাখিল এবং ২০০১ সালে বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ২০০২ সালে লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে বিদেশে যাওয়ার জন্য কয়েক দফা টাকা জমা দিয়েও তিনি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যেতে পারেননি। তবে ভিজিট ভিসায় যুক্তরাজ্য সফর করে দেশে ফিরেন। দেশে ফিরে বেকারত্বের অভিশাপের কাছে তিনি হার মানেননি। বেকার থাকা অবস্থায় কবির যখন কাউকে পাশে পাননি তখন পৈতৃক জমিতে ঘর তৈরি করে গাভী পালনের সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৪ সালে দেশি একটি গাভী দিয়েই খামারের কাজ শুরু করেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে ক্রয় করেছেন গাভী। কয়েক বছরের ব্যবধানে তার খামারে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৫টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে উন্নত জাতের গাভী ৭টি। কয়েকটি গাভী খুব অল্পদিনের মধ্যে বাচ্চা দিবে বলেও তিনি জানান। প্রতিদিন গড়ে ১০০ কেজির বেশি দুধ বিক্রি হচ্ছে তার খামারে। এতে প্রতিদিন প্রায় ৫শ-৬শত টাকা আয় হয়।কবির আহমদ জানান, নিজের প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা স্বপ্নের খামারে নিয়মিত মাসিক চুক্তিতে দুইজন শ্রমিক কাজ করেন। গরুর খাবার, ওষুধ খরচ, কর্মচারী বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদে প্রতি বছর লাখ টাকা আয় হবে বলে জানান। নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে বাজারে দুধ বিক্রি করে হয়ে উঠেছে স্বাবলম্বী। এক ছেলে, দুই মেয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি গাভীর দুধ বিক্রির টাকার সংসার চলে। তবে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পেলে খামারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। ভবিষ্যতে তিনি নিজেকে একজন মডেল খামারি হিসেবে দেখতে চান।