সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় এক ভুমিদস্যু একের পর এক মুক্তিযোদ্দাদের বসতভিটা ও জমি জবর দখল করে চলেছে। এপর্যন্ত প্রায় ১০ বিঘা সম্পত্তি জবরদখল করে চাষাবাদ করছে।
জানা গেছে শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রথম কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধো মনোহরপুর গ্রামের মিঞা আব্দুর রাজ্জাক গত কয়েক বছর আগে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর থেকে এই মুক্তিযোদ্ধার মনোহরপুর গ্রামের পৈত্রিক ভিটাবাড়ি ও বসতি এলাকার সমস্ত সম্পত্তি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জরব দখল করে রেখেছে । এই মুক্তিযোদ্ধার পৈত্রিক ও রেকর্ডিও সম্পত্তিও জোর করে দখলে নিয়ছে। এবং সন্ত্রাসীরা এখন তা ভোগদখল করছে । মনোহরপুর ও বিজুলিয় মৌজাতে এসব জমি রয়েছে। জমি দখলকারীদের মধ্যে অনেকে রাজাকার পরিবারের লোকজন রয়েছে ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধাওড়া ওরফে নতুন ধাওয়া গ্রামের গোলাম রসুল ওরফে জমিন নামের এই লোক একজন ভুমিদস্যু ও মানবপাচারকারী হিসাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে । এর আগে বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে অভৈধভাবে লোক পাচার করছে বলে ধাওড়া এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছে। অনেকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে এখনো তা ফেরত দেয়নি । তার বিরুদ্ধে শৈলকুপা থানাতেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছিল । এভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে সাম্প্রতি সে ঢাকায় প্রেস/ছাপাখানা খুলে বসেছে । এখান থেকে বিপুল অংকের অর্থ আয় করলেও সরকারের কোন কর-খাজনা, ট্যাক্স দেয় না বলে জানা গেছে । বর্তমানে সে শৈলকুপার কবিরপুর শহরে বসবাস করে, আর বেশীরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই গোলাম রসুল ওরফে জমিন তার মেয়ে বিয়ে দিয়েছে এক বিএনপি নেতার সাথে, সে ইবিতে পড়ার সময় ছাত্রদলের নেতা ছিল তবে সাম্প্রতি সময়ে আওয়ামীলীগ নেতাদের ধরে সাবরেজিস্ট্রার এর চাকুরী বাগিয়ে নিয়েছে। এই সাবরেজিস্ট্রার নানা কুটকৌশল করে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি বে-হাত করে দেয়ার ভুমিকা রেখে চলেছে।
শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মিঞা আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী বৃদ্ধ রোকেয়া বেগম জানান, ১৯৭১ সালে তার স্বামী একজন অস্ত্রধারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন,সরাসরি বেশকিছু যুদ্ধে তার স্বামী অংশ নেয়। এই যোদ্ধা তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনেও যুদ্ধক্ষেত্রে অবস্থান করায় বাবার মাটি পর্যন্ত দিতে আসতে পারেনি। কিন্তু তার মৃত্যুর পরে গত কয়েক বছরে মনোহরপুর ও বিজুলিয়া গ্রামের কিছু প্রভাবশালী কে দিয়ে এই গোলাম রসুল তাদের সম্পত্তি জবর দখল করে নিয়েছে । এখন তার কোন জমি অবশিষ্ট নেই, ফলে দু:সহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে । তিনি এসব জমি উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন । তিনি প্রধান মন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চান । এই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জানান, তাদের এক শরীকের জমি কৌশলে এই গোলাম রসুল কিনেছেন বলে দাবি করছে তবে, জমির কিছু অংশ কিনে থাকলেও প্রত্যেক জমির দাগ ধরে সকল জমি জবর দখল করে রেখেছে। এসব জমির কোন বন্টন নামাও করা হয়নি। ফলে এই মুক্তিযোদ্ধার ভোগ-দখল, পৈত্রিক ও রেকর্ডিও সমস্ত সম্পতি প্রভাব খাটিয়ে ষড়যন্ত্র করে কেড়ে নিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গোলাম রসুল ওরফে জমিনের সাথে মোবাইলে বারবার কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।