আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর ইংরেজি নববর্ষের শুরুতেই মন্ত্রিসভায় ব্যাপক রদবদল আসছে।এমন গুঞ্জন শুরু হয়েছে সরকারি দলের অন্দরমহলে। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে দলীয় সভানেত্রী যে কমিটি ঘোষণা করেছেন, তাতে এ গুঞ্জন আরও বেড়েছে। দলের কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে সরকার ও দলকে আলাদা করার অঘোষিত নীতি পরিষ্কার হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান বা দলীয় প্রধান হিসেবে তার বিকল্প কেবল তিনিই। তাই তিনি চাইলেও দলের একজন নেতা কর্মীও দলের সভানেত্রী পদে তাকে ছাড়তে চাননি, চাইবেনও না। এমনকি এটা কেউ ভাবেনও না। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে রাজনীতির পথপরিক্রমায় নেত্রীর প্রতি অনুগত, সারাদেশের নেতাকর্মীদের চেনা ওবায়দুল কাদেরের বিকল্প কেউ ছিলেন না। অতীতের ধারায় তাকেই আরেক টার্ম রাখা হলো। এদিকে , মন্ত্রীদের মধ্যে ৭ জন দলীয় পদ হারিয়েছেন। তারা হলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি,মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাদ পড়ার ঘটনায় অনেকে বিস্মিত। এদের ক্লিন ইমেজ ও সাংগঠনিক দক্ষতা প্রশংসিত ছিল। তবে আলোচনায় এদের মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতি ঘটতে যাচ্ছে।
সরকার ও দল আলাদা করার সূচনা ঘটলেও একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়া ড. হাছান মাহমুদ তো তথ্য মন্ত্রী পদে যেমন বহাল রয়েছেন তেমনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিও আছেন! এখন সামনে কী হয় তা দেখার অপেক্ষা। গুঞ্জন উঠেছে মন্ত্রিসভায় কয়েকজন যেমন পদোন্নতি পাচ্ছেন তেমনি অনেকে মন্ত্রিত্বও হারাচ্ছেন নানান বিতর্ক, ব্যর্থতার কারণে। প্রভাবশালী মন্ত্রীরাও এখানে রয়েছেন।
যারা দক্ষ অভিজ্ঞ হিসেবে মন্ত্রিসভায় আসছেন তাদের মধ্যে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শরীকদল জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার নাম আলোচিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বাদ পড়তে পারেন। পররাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তন আসতে পারে। এমনকি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমও মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ হতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। দলের দায়িত্বশীল পদ না পাওয়ায় কর্মীবান্ধব এ নেতার নাম জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে।