স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিজয়ের মাসে পাবনার ঐতিহাসিক মালিগাছা রণাঙ্গনে স্থাপিত প্রস্তাবিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের ডিজিটাল সাইন বোর্ডটি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা ভেঙ্গে ফেলেছে। বুধবার এ ঘটনা দেখে এলাকাবাসিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সংবাদ পেয়ে মালিগাছা ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার এবং অন্যান্য গ্রামবাসি ঘটনাস্থলে গিয়ে এ দৃশ্য দেখতে পান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পাবনা সদর থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাবনা সদর উপজেলার পাবনা-ঈশ^রদী মহাসড়কের মালিগাছা নামক স্থানটিতে পাকিস্তানি শুক্রসেনাদের সাথে পুলিশ ও মুক্তিকামী মানুষের এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এ দিনের যুদ্ধে পাবনার আটঘরিয়া থানার এএসআই আব্দুল জলিলসহ তিন জন শহীদ হন। আকমল হোসেন নামক এক মুক্তিকামী যোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এ দিন শুক্রসেনাদের গুলিতে গহের মন্ডল নামক একজন যুবকও শহীদ হন। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৬ জন পাকিস্তানি শুক্রসেনাদের মধ্যে ২ জন খতম হয়। অপর ৪ জন রাতের বেলা পালিয়ে যায়। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর বাজার মসজিদের পাশের শহীদ আব্দুল জলিলের কবর রয়েছে। কবরের পাশে নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মুন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কমপ্লেক্সটি উদ্ভোধন করেছেন।
২৯ মার্চ পাবনার মালিগাছা এবং মাধপুর রণাঙ্গনের ঐতিহাসিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়েই পাবনা জেলা প্রথম শুক্রসেনা মুক্ত হয়। পাবনা পুলিশ লাইনের শহীদ মিনারে ১নং শহীদের তালিকায় এবং রাজারবাগ পুলিশের হেড কোয়াটার্সের শহীদ মিনারে ৫নং শহীদের তালিকায় মালিগাছা রণাঙ্গনে শহীদ আব্দুল জলিলের নাম লিপিবদ্ধ করা আছে। এছাড়াও পাবনা জেলা পুলিশ প্রশাসন পুলিশ লাইনের মিলনায়তটি শহীদ আব্দুল জলিলের নামে নামকরণ করেছেন। মালিগাছা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদে সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার বাদি হয়ে এ বিষয়ে পাবনা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাবনা থানার অফিসার ইনচার্জ নাছিম আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।