স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর রাজশাহীর শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক এমএ সাঈদের ছেলে আলমগীর হোসেন বাবলু অবশেষে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পেতে যাচ্ছেন। তার নামে সরকারি জমি বরাদ্দের জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি চিঠি দেবেন। প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আলমগীর হোসেন বাবলুর নিজের কোনো ঘরবাড়ি নেই। রাজশাহী মহানগরীর মালদা কলোনীতে ভাড়া বাসায় থাকেন। নগরীর শিরোইল বাস স্ট্যান্ডে চা বিক্রি করে সংসার চালাতে হয় তাকে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের দৃষ্টিতে আসে। এ নিয়ে তিনি নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে লিখেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী এমএ সাঈদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মোটামুটি ভালোই আছেন, সরকারি চাকরিও করেন। একজন সন্তানই বিভিন্ন কারণে তার সন্তানদের সেভাবে লালনপালন করতে পারেননি। জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসিনুর রহমান সজলকে পাঠিয়েছিলাম। তার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের সাথে আমার কথা হয়েছে। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে, পরিবারের জন্য সঠিক কী কী করণীয় তা নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরও লিখেছেন- লিটন ভাইকে অনুরোধ করবো প্রাথমিকভাবে অস্থায়ী হলেও পরিবারের একজন সদস্যকে রাজশাহী সিটি করপোরশনে চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য। ইনশাআল্লাহ বাকিটা আমি দেখবো। এদিকে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম শহীদ সাংবাদিক সাঈদীর ছেলে বাবুর বাড়িতে তাদের সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন। এতে খুশি শহীদসন্তান বাবলু। তিনি বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পর আমার এই দুঃখ-দুর্দশার খোঁজ নিলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি আমার দায়িত্ব নেবেন বলে খবর পাঠিয়েছেন। এছাড়া সিটি করপোরেশন থেকেও লোক আসবে। তারা জানিয়েছে, সিটি করপোরেশনে আমার এক ছেলের চাকরির ব্যবস্থা হবে। এখন আমরা পরিবারের সবাই খুশি। সাংবাদিক এমএ সাঈদ রাজশাহী আর্ট কাউন্সিল বর্তমানে পদ্মা মঞ্চ ও রাজশাহী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। তিনি রাজশাহী বেতার প্রতিষ্ঠাকালে সংবাদপাঠক ও অভিনেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনী তাকে বাড়ি থেকে ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়া হয়।