বরিশালের আগৈলঝাড়ার বহুল আলোচিত সেই দু:স্থ মানবতার হাসপাতালে আবারও রোগীর সেবাদানে হয়রানির অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনেরা।
উপজেলার ফুল্লশ্রী এলাকার বাসিন্দা পারুল বেগম নামের এক রোগী নিয়ে শুক্রবার ওই হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে ছুটে যান তার স্বামী সাহাবুদ্দিন রাঢ়ী। চরম অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে পৌঁছুবার আগেই বাঁধ সাধে সেখানে কর্মরত নার্স ও আয়া বুয়ারা। তারা জানান, কাউন্টার থেকে টিকেট না কাটা পর্যন্ত রোগী দেখবেন না চিকিসকরা।
সাহাবুদ্দিন তার স্ত্রীকে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ করে পরে টিকিট কাটার কথা জানালে তার সাথে ওই হাসপাতালের নার্স চম্পা ও আয়া সেলিনা চরম দুর্ব্যবহার করে। একপর্যায়ে রোগীর স্বজনদের সাথে তুমুল বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনার সময়ে রোগী বাইরে ডাকচিৎকার করলেও তার সেবা দানে এগিয়ে আসেনি কোন চিকিৎসক। একপর্যায়ে টিকেট কাটার পরে রোগীর চিকিৎসা এগিয়ে আসেন ডা. মো. সামিউল ইসলাম। তিনি তার প্যাডে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিলেও সেখানে রোগীর নাম, বয়স, এমনকি রোগের ধরণ উল্লেখ না করে রোগীকে একাধিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার কথা বলেন। এভাবে চিকিৎসার নামে রোগী হয়রানির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ইতোপূর্বে কয়েকবার হাসপাতালটি বন্ধ করেও দেয়া হয়েছিল।
অভিযোগ রয়েছে, কথিত কিছু চিকিৎসক নামধারীদের দিয়ে একের পর এক রোগীর ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, রক্তের গ্রæপ নির্ণয়ে ভুল তথ্য প্রদান, টেস্ট না করেই কাগজে কলমে রিপোর্ট প্রদান করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া, এমনকি এনেস্থিশিয়া ব্যবহার না করে রোগীর হাত-পা বেঁধে অপারেশন করানোর মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে দু:স্থ মানবতার হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযানের সময় ভুয়া চিকিৎসক পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাবার ঘটনাও রয়েছে ওই হাসপাতালে। এমনকি বিভিন্ন অভিযোগে হাসপাতালটি দীর্ঘদিন বন্ধ করেও রেখেছিল প্রশাসন। বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনায় একাধিবার জরিমানা প্রদান করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময়ে জরিমানা প্রদান ও ক্ষমা চেয়ে পার পেলেও কর্তৃপক্ষ রোগী সেবায় মান বাড়েনি একটুও।
এব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ডা. হিরন্ময় হালদার বরাবরের মত বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি ঘটনা জেনে অভিযোগের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।