রাজশাহীর বৃহত্তম বাগমারা উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় বিগত দিনে ইউনিট ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের সময় জামায়ত, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও রাজাকার পরিবারের শত শত লোকজন আওয়ামীলীগে ঢুকে পড়েছে। তারাই এখন আওয়ামীলীগের মূল শক্তিতে পরিনত হয়েছে। এখন এসব অনুপবেশকারীদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে এবং তাদেরকে দল থেকে বহিস্কারেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের হাই কমান্ড থেকে। সম্প্রতি এসব অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে মাঠ পর্যায়ে নেমে পড়েছে পুলিশের একাধিক টিম। এই টিমকে বাগমারার ১৬ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভাকে ভাগ ভাগ করে এসব অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে পুলিশর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বাগমারা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের জেলা কমিটি গঠন কে কেন্দ্র করে এই তালিকা প্রস্তুত করতে জোর তাগাদা দেওয়া হয়েছে। যাতে ওই সম্মেলনে এসব অনুপ্রবেশকারী সেখানে গিয়ে কোনরুপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য এই তালিকা প্রস্তুত করে দ্রæত পাঠাতে হবে। এ দিকে পুলিশ এই তালিকা প্রস্তুত করতে মাঠে নেমে পড়ায় জামায়ত বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন এবং অনেকেই এখন আতংকের মধ্যে রয়েছেন। কারণ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে গিয়ে তারা কীভাবে নিজেদের পূর্ব পরিচয় গোপন করবেন। এ ব্যাপারে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মাহাবুর রহমান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন টিপু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামীলীগের এই অনুপ্রবেশকারীরাই দলকে ঘুন পোকার মত কুরে কুরে খাচ্ছে। তাদের কারণেই বাগমারা আওয়ামীলীগে এখন নৌকার ভোট দশ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। তাদেরকে দল থেকে যত দ্র্রত দল থেকে ছেটে ফেলা হবে দলের জন্য ততই মঙ্গল বয়ে আনবে। নচেৎ আগামীতে আওয়ামীলীগের বিশাল ভরাডুবি হবে এই সব অনুপ্রবেশকারীদের জন্যই। নরদাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য মাষ্টার আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ দল। এ দলে জনগণের অভাব নেই। অথচ স্থানীয় কতিপয় শক্তিধর ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিতর্কিত ব্যক্তিদের দলে টেনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে চলেছেন। তিনি ওই সকল বিতর্কিত ব্যক্তিদের দল থেকে বের করে দিয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ এবং ভালো মানুষের জন্য দলে জায়গা করে দিতে হবে। তাহলে আওয়ামী লীগের কাউকে নিয়ে আর বিতর্ক দেখা দেবে না। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মতিউর রহমান টুকু জানান, দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে চিঠি এসেছে। আমরা সে মোতাবেক তালিকা তৈরি করে করেছি । ব্যবস্থা নেওয়া দায়িত্ব কেন্দ্রের। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা বীরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, এর আগে ৯৬ সালে দল যখন দল ক্ষমতায় ছিল তখন এত অনুপ্রবেশকারীর ঘটনা ঘটেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই স্থানীয় সাংসদের কারণেই বাগমারায় বানের পানির মত দলে অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। তিনি আসন্ন জেলা ও উপজেলা সম্মেলনে দলের দূর্দিনের ত্যাগি নেতাদের দলের সম্মান জনক পদে দেওয়ার জন্য জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি জোর দাবী জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আতাউর রহমান আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা প্রস্তুত করার কথা স্বীকার করে বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই তাদেরকে এই তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সে মোতাবেক তালিকা তৈরি করছি। এসব অনুপ্রবেশকারীরা যাতে ওই সম্মেলনে কোন ভাবেই প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য ্এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।