গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় গাড়িষাপাড়া ও পুরানপাড়ার মধ্য দিয়ে গুমানী নদী হতে প্রবাহিত সরকারি খালটি দখল দূষণে হারিয়ে যেতে বসেছে। আশির দশকে খালটি খনন করা হয়। অনেকে এটাকে জিয়া খাল হিসেবে চেনেন। ওই সরকারি খাল পাড়ের মানুষগুলো খালটিকে ক্রমান্বয়ে গিলে খাচ্ছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, দখলবাজরা যে যার ইচ্ছেমত খালটি দখল করেছে। মৎস্যজীবি পাড়া ব্রীজের নিচে ওই খালের ওপর নির্মিত হয়েছে আওয়ামীলীগের দলীয় অফিস। ওই অফিসে নেতৃত্ব দেন ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বাহার মল্লিক। খাল খেকোদের অধিকাংশই প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের দেখাদেখি অন্যেরাও মাটি ভরাট করে খালটি দখলে নিচ্ছে।
এক সময় গুমানী নদী থেকে ওই খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় শৈলগাড়ী, খলসেগাড়ী, কান্টাগাড়ী, কান্দিপাড়াসহ দক্ষিণ চলনবিলাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হতো। কিন্তু জবরদখল ও ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে একযুগ ধরে এই সরকারি খাল দিয়ে আর পানি প্রবাহিত হয়না। পৌরসভার ড্রেনের পানি নিস্কাশনের জন্য ওই খাল ব্যবহার করা হতো। বাঁধ দিয়ে খালটির অসংখ্য জায়গা জবরদখল করা হয়েছে। আর কিছুদিন পর দেখলে মনে হবে এখানে কোন খালই ছিলনা। খালটির মাঝে মাঝে ফাঁকা থাকলেও ময়লা আবর্জনা আর বদ্ধ পানিতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে মশা তৈরির কারখানায় রুপান্তরিত হয়েছে ওই খালটি। খালটি দখল করে মেরে ফেলার খেলায় মেতেছে যারা তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেছেন চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আত্হার হোসেনসহ স্থানীয় সচেতন মহল। তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে খালটি অতিদ্রুত দখলমুক্ত করে সময় উপযোগী ও নান্দনিক করার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
গুরুদাসপুর পৌর মেয়র মো. শাহনেওয়াজ আলী জানান, সরকারি খাল কোনো অবস্থাতেই দখল করা যাবে না। তবু কেই কারো কথা শুনছে না। খালটি রক্ষার্থে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, নকশা দেখে কতটুকু খাল দখল হয়েছে সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নিয়ে খালটি উদ্ধার করা হবে।