রাজশাহীতে অল্প সময়ে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী হয়েছে সাইদুর

নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীতে সাইদুর রহমান খুব অল্প সময়ে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সাবেক এই সেনা সদস্য সেনা বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে বসে থাকেননি। ছোটা বেলা থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে ছিলেন। চাকুরী থেকে অবসর নিয়ে স্থানীয় শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ইচ্ছা ছিল শ্রমিকদের সংগঠিত করে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো। তার সে ইচ্ছা এখনো পূরন হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের মূলধারার নেতৃবৃন্দের সাথে বনিবনা না হওয়ায় রাজনীতি থেকে পিছপা হন। তবে হাল ছাড়েননি সাইদুর। শুরুতে ডিস ব্যবসা দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হওয়ায় অনেকে তাকে ডিস সাইদুৃর বলেও চেনেন। এর পর টার্কি মুরগী পালন। এখন এসে শুরু করেছেন হাঁস পালন। বাগমারার উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাম্পাকুড়ি মহল্লায় গিয়ে সরেজমিন ঘুরে জানা যায় সাইদুরের হাঁস পালনের গল্প। হাঁস পালনে তার কোন প্রশিক্ষন নেই। নিজের টার্চ মোবাইল থেকে ইন্টারনেটে সার্চ করে জেনেছেন হাঁস পালনের বিভিন্ন কলাকৌশল। এখন তার খামারে এক হাজার হাঁস রয়েছে। এগুলোর বয়স এখন ১শ দিন ছাড়িয়ে গেছে। সাইদুর জানান ১শ পনের থেকে বিশ দিন হলেই হাঁসগুলো পূর্ন মাত্রায় ডিম দেওয়া শুরু করবে। তবে এখন কিছু কিছু হাঁস ডিম দেওয়া শুরু করেছে। ৩৫ টাকা পিচ দরে হাঁসের বাচ্চাগুলো তিনি সান্তাহার হাঁস প্রজনন কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করেছেন। হাঁসের জাত খাকি ক্যাম্বেল। এই জাতের হাঁসের ডিম উৎপাদন হার বেশি। ১ হাজার হাঁসে গড়ে ৯শ ডিম পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৯ হাজার টাকা। প্রতিদিন খাবার ও রক্ষনাবেক্ষন মিলে হাঁসগুরোর পিছনে ৫ হাজার টাকা খরচ হবে এবং প্রতিদিন লাভ দাঁড়াবে ৪ হাজার টাকা। এই হারে মাসিক লাভের পরিমান ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সাইদুর জানান, বাগমারাতে হাঁসপালনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে যে খালবিল রয়েছে তাতে দেড় থেকে দুই লক্ষ হাঁস পালন সম্ভব। এসব হাঁস পালনে বাড়তি কোন খরচ হবে না। প্রকৃতিগত ভাবে লালন পালন হবে। তার মতে বাগমারায় যে হারে পুকুরে মাছ চাষ হয়। প্রতিটি পুকুরে মাছের সাথে হাঁস চাষ করে ব্যাপক লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তার মতে মাছ চাষীরা এই ুযোগটি কাজে লাগাতে পারে। বর্তমানে উপজেলাব্যাপি প্রায় ৩০ টি হাঁসের খামার রয়েছে। সাইদুরের মতে যে হারে এলাকায় হাঁস পালন বাড়ছে সে হারে স্থানীয় প্রানী সম্পদ দপ্তর ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারছে না। হাঁসের বাচ্চার বয়স ২১ দিন হলেও তাকে ডার্ক প্লেগ ভ্যাকসিন দিতে হয়। এছাড়া হাঁস পালন জনিত কোন সমস্যা হলে তারা প্রানি সম্পদ দপ্তর থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। উপজেলা ব্যাপি হাঁস পালন বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ড: আতিবুর রহমান জানান, চাহিদা অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন সরবরাহের চেষ্টা করি। তবে লোকবল সংকটের কারনে খামার মালিকদের পূর্নমাত্রায় সেবা দিতে কিছুটা সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও আমরা বিকল্প ভাবে তাদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে থাকি।