আজ শনিবার ভারতের আসামে প্রকাশিত হচ্ছে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা। নির্ধারিত হবে ৪১ লাখ মানুষের ভাগ্য। স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে উৎকণ্ঠা। ইতিমধ্যে খসড়া তালিকায় স্ত্রীর নাম না থাকায় করিমগঞ্জের সোনারপাড়ার প্রীতিভূষণ দত্ত আত্মহত্যা করেছেন।
আজ আসাম এনআরসির ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশিত হবে। ২ হাজার ৫০০ এনআরসি সেবা কেন্দ্রে গিয়েও তালিকায় নিজের নাম আছে কিনা তা দেখা যাবে। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ অর্থাৎ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগের সময় পর্যন্ত আসাম তথা ভারতের নাগরিক হওয়ার ভিত্তি ধরা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আসামের ৩৩ জেলার ১৪টিকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে ১৪৫ কোম্পানি আধাসেনা।
৪১ লাখ মানুষের মধ্যে রাজ্যহীন, দেশহীন, পাকাপাকি ভাবে ‘বিদেশি’ বা ‘উদ্বাস্তু’ অথবা ‘অনুপ্রবেশকারী’ ছাপ পড়ার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, খসড়ায় বাতিলদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ মানুষই উদ্বেগে রয়েছেন।
আসামে প্রথম নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫১ সালে। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় প্রক্রিয়া। এতে ৫২ হাজার কর্মীকে কাজে লাগানো হয়। বাজেট বরাদ্দ হয় ১ হাজার ২২০ কোটি রুপি। তার পর থেকে সংশোধন হতে হতে শেষ পর্যন্ত ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হতে চলেছে আজ। খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই। সেই তালিকায় তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে বাদ পড়েছিলেন ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জন। পরে অতিরিক্ত খসড়ায় বাদ পড়েন আরো ১ লাখ মানুষ। বাদ পড়াদের মধ্যে অধিকাংশই বাঙালি। পরে তালিকায় নাম সংযোজনের আবেদন করেন ৩১ লাখ।
যারা খসড়া তালিকায় স্থান পাননি তাদের অনেককেই ঠাঁই পেতে হয়েছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। যদিও ‘নাগরিকপঞ্জিতে নাম না থাকলেই তিনি বিদেশি হয়ে যাবেন না’-এই মর্মে সচেতনতা বার্তা দিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আসামের খসড়া নাগরিকপঞ্জিতে যাদের নাম নেই তারা পুনরায় ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন বলে তারা জানিয়েছে। আবেদন করার সময়সীমা ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।