সোহেল রানা ঃ পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার মৃত জাকির শেখের মেয়ে সাথী খাতুন (২৮) এর সাথে আমিনপুর থানার আমিনপুর মধ্যপাড়া গ্রামের শমসের আলী মিয়ার ছেলে হিরন মিয়ার সাথে কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক লোভী স্বামী হিরণ মিয়া ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সাথীর উপর নানা রকম নির্যাতন চালাতে থাকে। বিয়ের সময় সাধ্যমত সাথীর বাবা মা অনেক কিছুই দিয়েছিল। কিন্তু আরও ৪০ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল। এই ৪০ হাজার টাকা সাথীর বাবা মা দিতে না পাড়ায় সাথীর উপর প্রায়ই নির্যাতন করতো। ঈদে মায়ের বাড়ি আসার কথা ছিল সাথীর। গতকাল সকাল ৬টার দিকে সাথীর স্বামী হিরন মিয়া তার মাকে ও বোনকে ফোন করে বলে আপনার মেয়ে পালিয়েছে। পরে বলে আপনার মেয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছে এবং সর্বশেষ বলে সাথী গলায় দড়ি দিয়েছে। এ খবর শুনে সাথীর ভাই ও মাসহ পরিবারের সদস্যরা সাথীর শশুর বাড়ি দিয়ে দেখে সাথীকে উঠানে চকির উপর ওড়না দিয়ে ঢেকে রেখেছে। ঘরের ভেতরে ডাবের সাথে ঝুলন্ত রশি দেখতে পায়। সকাল সাড়ে ৯টায় আমিনপুর থানার একদল পুলিশ সদস্য সাথীর লাশ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পুলিশের ধারণা স্বামীর নির্যাতনের কারণেই সাথীর মৃত্যু হয়েছে। এ বিষয়ে আমিনপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। হিরন মিয়ার বড় ভাই হারুন মিয়া দিনাজপুর জেলার একজন পুলিশ অফিসার ও তার বোন পুষ্প গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ কনস্টেবল। বড় ভাই ও বোনের প্রভাবেই পাষন্ড স্বামী হিরন মিয়া তার স্ত্রী সাথীকে নির্যাতনের পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে এবং এই হত্যাকান্ডটি আতœহত্যার বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। বাবা মার একমাত্র মেয়ে ছিল সাথী। মেয়ে হারিয়ে মা এখন পাগল প্রায়। সাথীর এই হত্যাকান্ডে এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সাথীর মা ও ভাইয়েরা এখন পশ্চিম সাধুপড়া জুট পট্টিতে বসবাস করছে। মৃত্যুর সময় সাথী তার দু’টি কন্যা সন্তান হিমি (১৩) ও ছোট মেয়ে কথা (১০) মা ভাইসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছে। সাথীর পরিবার থেকে জানায় সাথীর পোষ্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই তার পরিবার এ বিষয়ে মামলা করবে বলে জানা গেছে।