প্রতিনিধি :: বিয়ে করে কনে নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আহমদ আলী (৩৫) নামের এক প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ও্ই কনের বড়ভাইয়ের দায়ের করা প্রতালনা মামলায় মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। আহমদ আলী সিলেটের বিশ্বনাথের ইলিমপুর গ্রামের জমির আলীর ছেলে।
এদিকে, বরকে গ্রেপ্তারের পর কনেকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।প্রতারণার মাধ্যমে একাধিক বিয়ে, আগের স্ত্রীকে নির্যাতন ও যৌতুক গ্রহণের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার (০১ আগষ্ট) সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে একটি নোহা গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। এই গাড়িটি প্রথম স্ত্রীর বড়ভাইয়ের কাছ থেকে যৌথুক হিসেবে নিয়ে তিনি অন্যত্র বিক্রি করে দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অভিযোগ রয়েছে, আহমদ আলী দেশে নানা বিয়ের নামে একের পর এক প্রতারণা করে যাচ্ছেন। পুলিশের দাবি, ব্রিটিশ পাসপোর্ট দেখিয়ে বার বার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন তিনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, যুক্তরাজ্যের ওল্ডহামে বসবাসকারী আহমদ আলী ২০১৪ সালের শেষের দিকে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেন। তারপর ২০১৫ সালে বিশ্বনাথের দেওকলস ইউনিয়নের সৈয়দপুর (সদুরগাঁও) গ্রামের মৃত মাহমদ আলীর মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রতি রাতেই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। ভয়ে স্ত্রী তার লন্ডন প্রবাসী ভাই আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ধারে প্রায় ৮ লাখ টাকা স্বামীকে এনে দেন। তারপর স্ত্রীর বড়ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ১৫লাখ টাকার নোহা গাড়ি এনে দেন স্ত্রী রুমি।
কিন্তু টাকা আর গাড়ি এনে দিলেও তার উপর স্বামীর নির্যাতন কমেনি। তাছাড়া গাড়িটিও নিজে ব্যবহার না করে প্রতারণা করে বিক্রি করে দেন আহমদ আলী। এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝটির পর সর্বশেষ গত রমজান মাসে বাবার বাড়িতে গিয়ে স্ত্রী আর তার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন নি। এই সুযোগে স্ত্রীকে না জানিয়ে মঙ্গলবার গোপনে বালাগঞ্জের একটি গ্রামে বিয়ে করে বাড়ি ফিরেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ওই লন্ডনী।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে স্ত্রীর বড় ভাই আব্দুর রহিম বাদি হয়ে থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেছেন। বিশ্বনাথ থানায় মামলা নং-২৫। মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে নোহা গাড়িটি উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের ওল্ডহামে বসবাসকারী আহমদ আলী ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর সিলেটের ওসমানীনগর থানা পুলিশের হাতে এক যুবতী ও সহযোগীসহ ধরা পড়েন। সিলেটের ওসমানীনগর থানায় দায়েরকৃত মামলা নং ২৯/১৮ইং। ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ছিঁড়ে ফেলার কথা বলেন। মঙ্গলবার প্রতারণা মামলায় বিশ্বনাথ থানা পুলিশের কাছে ধরা পড়েও একই বক্তব্য দেন তিনি।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, অনেক অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় আহমদ আলীকে আদালতে না পাঠিয়ে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে শশুরবাড়ি থেকে এনে বিক্রি করা গাড়িটি বৃহস্পতিবার জকিগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।